সুকুমার সরকার, ঢাকা: সিলেটে জঙ্গি এবং সেনা ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর মধ্যে ৯২ ঘণ্টার গুলিযুদ্ধের পর শেষ হল ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। এই অপারেশনে প্রাণ গেল ছয় জঙ্গি-সহ ১২ জনের। শনিবার সন্ধেয় জঙ্গিদের ছোড়া গুলি বোমায় দুই পুলিশ আধিকারিক-সহ ছয়জন নিহত হন। জখম হন একজন পদস্থ সেনা আধিকারিক।
সিলেটের শিববাড়ির আতিয়া মহলের জঙ্গি ডেরা এখন সম্পূর্ণভাবে আধা-সেনাদের নিয়ন্ত্রণে। সোমবার সন্ধে ৭টা ৪৫ নাগাদ জঙ্গি আস্তানা সংলগ্ন পাঠানপাড়ায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ কথা জানান সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরও জানান, অভিযানে সেনা কমান্ডোদের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অভিযানের পুরোটা সময়ই পরিস্থিতি প্যারা-কমান্ডোদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে তল্লাশি এখনও জারি রয়েছে।
তল্লাশি শেষ হলে ঘটনাস্থলে সিআইডি’র ক্রাইম সিন ইউনিট আসার কথা। আতিয়া মহলের নিচের তলায় চারটি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে বলেও জানান ফখরুল আহসান। তিনি বলেন, মৃতদেহে এখনও বিস্ফোরক লাগানো রয়েছে। সতর্কতার সঙ্গে সেগুলি নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছেন কমান্ডোরা। তিনি বলেন, জঙ্গিরা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত ছিল। বৃহস্পতিবার রাত ১২ টায় পুলিশ সংবাদ পেয়ে জঙ্গি আস্তানা ঘিরে ফেলে। টের পেয়ে জঙ্গিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি ছোড়ে। শুক্রবার ঢাকা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী অভিযানে যোগ দেয়। তারা সামাল দিতে না পারায় শনিবার সকালে জঙ্গি বিরোধী অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনীর আধা-সেনা ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা। সোমবার ছিল অভিযানের চতুর্থ এবং ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’-এর তৃতীয় দিন। সেনা অভিযান প্রথম দফায় এদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টে পর্যন্ত চলে। ব্যাপক বিস্ফোরণ ও গুলির আওয়াজ শোনা যায় সেই সময়। পরে আবার আরেক দফা অভিযান চলে। আতিয়া মহল থেকে একজন যুবতী ও তিনজন পুরুষের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
ফখরুল আহসান জানান, জঙ্গিদের কাছে প্রচুর গোলা-বারুদ মজুত ছিল। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে অভিযান চালানো হয়। আতিয়া মহল থেকে ৭৯ জন সাধারণ মানুষকে জীবিত বের করে আনতে পারাটাই অভিযানের বড় সফলতা ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.