ছবি: প্রতীকী।
সুকুমার সরকার, ঢাকা: সুখী জীবনের স্বপ্ন চোখে নিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েছিলেন গৃহবধূ। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। স্বামীর হাতে ধরা পড়ে খুন হতে হল গৃহবধূকে। বাংলাদেশের (Bangladesh) পূর্বাঞ্চলীয় জেলা সুনামগঞ্জ শহরের পশ্চিম তেঘরিয়া এলাকার ঘটনায় শোরগোল। বাবার হাতেই যে মা খুন হয়েছেন, তা নিশ্চিত করেছে মেয়ে ও প্রতিবেশীরা। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে শহরের পুরনো বাসস্টেশন এলাকা থেকে নিহতের স্বামী, বছর বিয়াল্লিশের আবদুল হামিদ মিল্টনকে আটক করেছে এলিট ফোর্স ব্যাব।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৫ দিন আগে স্বামী আবদুল হামিদের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিরিশ বছরের রিপা বেগম। পরে পৌর শহরের পশ্চিম তেঘরিয়া এলাকায় সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা গ্রামের গুলজার আহমদ নামের এক যুবককে নিজের স্বামী পরিচয় দিয়ে বসবাস শুরু করেন। মায়ের সঙ্গে ছিলেন মেয়েও। স্ত্রীর এই পরকীয়া (Extra Marrital Affairs)সম্পর্কের কথা জেনে ফেলেন হামিদ। তারপরই তিনি খেপে ওঠেন। রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ সেই বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা আটকে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন। তার মাঝে দা দিয়ে মাথায় আঘাত করলে রিপা বেগম চিৎকার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা জমায়েত করেন। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে হামিদ দরজা খুলে পালিয়ে যান।
মিল্টন সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নে মঈনপুর গ্রামের লেম্বু মিয়ার ছেলে। প্রতিবেশীরা আহত রিপা বেগমকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রিপা বেগমের মেয়ে ফাহমিদা জাহান বলেন, ‘‘আমি পাশের ঘরে বসে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ বাবা এসে ঘরের দরজা লাগিয়ে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করে। পরে মায়ের চিৎকার শুনে পাশের ঘরের খালা-সহ আমরা সবাই দৌড়ে আসি। দরজা খোলার জন্য অনুরোধ করলে বাবা দরজা খুলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় মা মাটিতে পড়ে ছিল।’’
বাসার মালিক আরিফুর রহমানের কথা, ‘‘১৫ দিন আগে রিপা বেগম আমার বাসা ভাড়া নেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামী গুলজার আহমদ ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকবেন। সেই অনুযায়ী আমরা তাদের বাসা ভাড়া দিই। কিন্তু আজকে হঠাৎ তার প্রথম স্বামী এসে তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করে চলে যান। আমি বিষয়টি ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানাই।’’ সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন (Murder) হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.