সংক্রমণের ভয়ে ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ
সুকুমার সরকার, ঢাকা: গোটা বিশ্বই এখন করোনা ভাইরাসে জর্জরিত। এর প্রকোপ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশেও। এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৪ জন বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে দুজনেরও। অবস্থা সামাল দিতে চিন থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স আনার পরিকল্পনা করছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে করোনার সংক্রমণ এড়াতে ঢাকা-সহ বাংলাদেশের কোথাও কোথাও লকডাউন করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা জারির করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ-সহ কয়েকটি দেশে করোনা প্রতিরোধে মাস্ক, টেস্ট কিট আর নিরাপত্তা পোশাক অনুদান হিসেবে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন চিনের আলিবাবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। আজ শনিবার নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে একথা জানান তিনি।
শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহম্মদ সাঈদ খোকন পুরনো ঢাকার বাড়িতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। এরপরই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে দেশে লকডাউন করার কথা জানান। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থাও আগামিদিনে ভয়াবহ হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এপ্রসঙ্গে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিছু কিছু এলাকা আংশিক লকডাউন করা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও পুরোপুরি লকডাউন করা হয়েছে। অনেক দেশ জরুরি অবস্থাও জারি করেছে। লকডাউন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা করায় তারা ভাল ফল পেয়েছে। সেখানে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ধীরগতিতে বেড়েছে। কোথাও কোথাও আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে চলে এসেছে। আজকে এই বিষয়ে আমাদের পর্যালোচনা করার সময় এসেছে। লকডাউন করলেও ঢাকা-সহ অন্যান্য শহরে কীভাবে বা কত সময় লকডাউন করা যায় সেসব বিষয়ে আলোচনা চলছে।
এদিকে শনিবার দুপুরেই ঢাকার মহাখালিতে অবস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বর্তমান পরিস্থিতিকে যুদ্ধাবস্থা বলে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চিন থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ইতিমধ্যে দেশের সমস্ত চিকিৎসক ও নার্সদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য পিপি সংগ্রহ করা হচ্ছে। নতুন করে আরও চারজনের দেহে করোনা ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। এই নিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৪ জন। বর্তমানে ৫০ জন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোয়ারেন্টাইনে আছেন। আর হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১৪ হাজার জন। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট ও শেখ সেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন হচ্ছে। এই দুটি হাসপাতাল যেকোনও সময় গ্রহণ করে উচ্চতর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া নতুন ৪০০ আইসিইউ ইউনিট স্থাপন করা হবে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.