সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) ফের ধর্মীয় অশান্তির আগুন। উত্তর জনপদ জেলা পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে। নিহত হয়েছেন বছর তিরিশের আরিফুর রহমান এবং তেইশ বছরের জাহিদ হাসান। নিহত জাহিদ আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বলে জানা গেছে। জাহিদকে বিক্ষোভকারীরা করতোয়া নদীর ধারে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসার আহ্বায়ক আহমদ তবশের চৌধুরী জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ এই সময় টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও গুলি (Firing) চালায়। পুলিশ, সাংবাদিক-সহ ৫০ জনেরও বেশি জখম হয়েছেন।
জানা গিয়েছে, পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায় শুক্রবার সালানা জলসার আয়োজন করে। কিন্তু জলসায় বাধ সাধে কয়েকজন ব্যক্তি। তারা এই জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। ধর্মীয় হানাহানির ভয়ে পুলিশ মিছিলে বাধা দিতে গেলে তাদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ (Clash) ঘটে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এদিন বেলা দু’টো দিকে রাজধানী ঢাকা থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরের জেলা পঞ্চগড় শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গী মোড়ে এই সংঘর্ষ হয়।
প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পঞ্চগড় শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ধাওয়া, পালটা ধাওয়া, ইট-পাটকেল ছোঁড়াছুড়ি, পুলিশের রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় পুরো এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা শহরে অবস্থিত আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও ট্রাফিক অফিসে মোটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি আধা সামরিক বাহিনী বিজিবি ও এলিট বাহিনী র্যাব (RAB) মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও পঞ্চগড়ের ফুলতলা এলাকায় আহমদনগরে তিনদিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসার আয়োজন করে আহমদিয়া সম্প্রদায়। স্থানীয় সদস্য জলসা প্রতিহতের চেষ্টা করলে এই সংর্ষের সূচনা ঘটে। পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, ”পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশের পাশাপশি বিজিবি ও র্যাবের টহল অব্যাহত রয়েছে।” সংঘর্ষের পর জেলা প্রশাসন মাইকিং করে সালানা জলসা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.