ফাইল ফটো
সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে হামলাগুলো ছিল ISIS-এর। সম্প্রতি এই তথ্যই দিয়েছে আমেরিকার বিদেশমন্ত্রক। ২০১৯ সালে হওয়া ছোট ছোট কিছু বিস্ফোরণ ও হামলা ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (ISIS) চালিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। এছাড়াও গত বছর বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিছুটা বেড়েছে বলেও জানায় তারা। বুধবার রাতে ওয়াশিংটন ডিসির বিদেশ দপ্তর থেকে প্রকাশিত ২০১৯ সালের সন্ত্রাস বিষয়ক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গত বছর বাংলাদেশে ছোট পরিসরে কিছু বিস্ফোরণ ও হামলাকে সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ ইতিপূর্বে আইএসের হামলা বলে অভিহিত করলেও স্থানীয় বিশ্লেষকরা তা নাকচ করে দিয়েছিলেন। স্থানীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের যুক্তি ছিল, আইএসের যেসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিশ্ব জানে তাতে এ ধরনের ছোট পরিসরে হামলার নজির নেই। কিন্তু, মার্কিন বিদেশ দপ্তর প্রতিবেদনে এই সমস্ত হামলাকে আইএসআইএস বলেই অভিহিত করা হয়েছে। তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত জঙ্গি গোষ্ঠী বাংলাদেশে সক্রিয় বলে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েক বছর ধরেই জানিয়ে আসছে।
আর বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর আইএসআইএস বাংলাদেশে ছটি ‘ইমপ্রুভাইজড এক্সক্লুসিভ ডিভাইস (IED)’ হামলার দায় স্বীকার করেছে। সেই হামলাগুলোর পাঁচটিই ছিল পুলিশকে লক্ষ্য করে। এ ছাড়া আইএসের আত-তামকিন মিডিয়া আউটলেট বাংলাদেশ সরকার ও অন্যদের শত্রু হিসেবে অভিহিত করে তাদের বিরুদ্ধে বাংলায় প্রোপাগান্ডামূলক ভিডিও প্রকাশ করেছিল। এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আইএসের মধ্যে আন্তঃদেশীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অর্থবহ কোনও সম্পর্ক থাকার কথা নাকচ করেছে। গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ইউনিট পরিচালনার আনুষ্ঠানিক অনুমতি দিয়েছে। এছাড়া ঢাকায় সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ২০১৬ সালের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় সমর্থনের দায়ে সাতজনকে সাজা দিয়েছে। সন্ত্রাসের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কোনও ধরনের ছাড় না দেওয়ার নীতির কথাও বলা হয়েছে মার্কিন প্রতিবেদনে। উল্লেখ করা হয়েছে, সীমান্ত নিরাপত্তা ও প্রবেশ ব্যবস্থা জোরদারে আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশ সহযোগিতা করেছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ আছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে একজন যাত্রী ফ্লাইট ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, সেই যাত্রীর হাতে খেলনা পিস্তল ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশকিছু ঘটনা আছে যেখানে যাত্রীর নিরাপত্তা তল্লাশিতে ধরা পড়েনি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষিত বিস্ফোরক শনাক্তকরণ কে-৯ দল ঢাকায় বিমানবন্দর পর্যবেক্ষণ করলেও তারা সেখানে স্থায়ী নয়। বাংলাদেশ ইন্টারপোলকে অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য দিলেও সন্ত্রাসীদের ওপর নজরদারির কোনও তালিকা নেই। এমনকী বাংলাদেশ বিমান যাত্রীদের আগাম তথ্য ও রেকর্ড বিশ্লেষণ করে না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.