সুকুমার সরকার, ঢাকা: চিনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঋণের সম্পর্ক জোরদার হয় বিগত দশকে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরকালে বাংলাদেশকে ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার কোটি ডলার সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ফলে কমিউনিস্ট দেশটির বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে শামিল হয়েছে ঢাকাও। এই প্রেক্ষাপটে চিনের প্রভাব ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গলায় শোনা গেল আশঙ্কার সুর।
সোমবার রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে ‘বে অফ বেঙ্গল কনভারসেশনে’ বক্তৃতা দেন পিটার হাস। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনের এই সম্মেলনে তিনি ‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রতিযোগিতা’ শীর্ষক অধিবেশনে মত পেশ করেন। হাস বলেন, “চিনের বিআরআই এবং সমুদ্রে বিস্তৃত আকাঙ্ক্ষা এই অঞ্চলে একটি নতুন যুগের ইঙ্গিত দিয়েছে। এটি উন্মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সামনে সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে। কর্তৃত্ববাদী শক্তি আন্তর্জাতিক বিষয়ে মৌলিক নিয়ম পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। এই সন্ধিক্ষণে আমাদের অবশ্যই বাড়তি সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হবে।”
উল্লেখ্য, চিনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঋণের সম্পর্ক জোরদার হয় বিগত দশকে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরকালে বাংলাদেশকে ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার কোটি ডলার সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণ-সহ যোগাযোগ পরিকাঠামো, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি-সহ বিভিন্ন খাতের প্রকল্প রয়েছে। ঋণচুক্তি হয়েছে নয়টি প্রকল্পে। গত কয়েক বছর ধরে প্রতিবছর গড়ে একটি প্রকল্পের অর্থায়নে চিনের সঙ্গে ঋণচুক্তি হয়েছে। পর্যবেক্ষক মহলের মতে- ঢাকা হয়তো চিনের ঋণে ‘ধীরে চলো নীতি’ অবলম্বন করছে। এটা সঠিক নীতি। কারণ, উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়া হয় না বলে চিনের মতো দ্বিপাক্ষীয় ভিত্তিতে ঋণ নিলে উচ্চমূল্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হয়। আবার কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন থাকে। ২০১৯ সালে ১০টি অগ্রাধিকার প্রকল্প চিহ্নিত করে সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কাজে আসেনি। সেই তালিকার মধ্যে ঢাকা-আশুলিয়া উড়ালসড়ক, ছয়টি পূর্ণাঙ্গ টিভি কেন্দ্র স্থাপন ও বিজেএমসির আওতায় থাকা সরকারি পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন, রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.