সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গা ইস্যুর স্থায়ী সমাধান চেয়ে এবার মায়ানমারকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিল রাষ্ট্রসংঘ। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য মায়ানমারকে যে সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, এবার সেই সাহায্য প্রত্যাহারের হুঁশিয়ারি দিল আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মায়ানমার সরকার যে জাতিবিদ্বেষি নীতি গ্রহণ করেছে, সেই কারণেই রাষ্ট্রসংঘের এই হুমকি বলে জানা গিয়েছে৷
[ আরও পড়ুন: মাদক কারবারে রাজি না হওয়ার জের, কিশোরীবধূকে পুড়িয়ে খুন বাংলাদেশে]
রাষ্ট্রসংঘের তরফে বলা হয়েছে, রাখাইনে হিংসা শুরু হলে ঘরছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্য আইডিপি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। তখন থেকেই ওই ক্যাম্পগুলির জন্য মায়ানমার সরকারকে সহায়তা দিয়ে আসছে রাষ্ট্রসংঘ। এছাড়া ২০১৭-র আগস্টে হিংসার ঘটনা শুরু হলে ৭ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম মায়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। কিন্তু এখনও বহু রোহিঙ্গা রাখাইনের ওই আইডিপি ক্যাম্পেই রয়েছে। এবং তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হলে সহায়তা ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি রাষ্ট্রসংঘের৷
[ আরও পড়ুন: কক্সবাজারের টেকনাফে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে খতম তিন ইয়াবা কারবারি ]
রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরাতে সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুয়েতরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহরিয়ার আলম। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবের সামনে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে সমস্ত তথ্য তুলে ধরেন তিনি। রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যর্পণের বিষয়ে মায়ানমার সরকারের অসহযোগিতা এবং অন্যান্য সমস্যাগুলি সম্পর্কেও রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিবকে অবহিত করেন। আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার বিষয়ে ওআইসি-র সম্মেলনে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কেও জানান তাঁকে। বৈঠকে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গা প্রত্যর্পণ শুরু না হওয়ার কারণে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বরাবরের মতোই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের মানবিক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা হওয়ার পরেই রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অশান্তি শুরু হয় মায়ানমার সরকারের। এরপরই রাখাইন প্রদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের জীবনে নেমে আসে দুর্যোগের ঝড়। গণহারে হত্যা, ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে মায়ানমার সেনার বিরুদ্ধে। নিজেদের বাঁচাতে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হতে, নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরতের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়। যদিও, তা আলোর মুখ দেখেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.