সুকুমার সরকার, ঢাকা: স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে শ্বশুরবাড়ি এসেছিলেন জামাই। কিন্তু বেঁকে বসেন শ্বশুর। মাদকাসক্ত জামাইয়ের ঘরে মেয়েকে তিনি পাঠাবেন না। অনেক কাকুতিমিনতি করেও শ্বশুরের মন গলাতে পারেননি জামাই। শেষে স্ত্রীকে না পেয়ে রাগে শ্বশুরবাড়িই পুড়িয়ে ছাই করে দিলেন গুণধর! এই কাণ্ড ঘটেছে বাংলাদেশের দক্ষিণ জনপদ জেলা পটুয়াখালির বাউফল পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর তিনেক আগে রফিকুল ইসলামের মেয়ে আখি বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় ফয়সাল হাওলাদারের। প্রেম করেই নাকি বিয়ে করেন দুজনে। কিন্তু এই সম্পর্ক মেনে নেননি রফিকুল। বিয়েতে রাজি ছিলেন না তিনি। ফয়সাল ও আখির বছর দেড়েকের একটি কন্যাসন্তান আছে। সম্প্রতি ফয়সাল মাদক সেবন ও কারবারে জড়িয়ে পড়ে। তাঁকে কয়েকবার আটকও করে পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান রফিকুল। ফয়সালের সঙ্গে ডিভোর্সের ব্যবস্থাও করেন। তার পর থেকে বাবার বাড়িতেই থাকছিলেন আখি।
সোমবার দুপুরে ফয়সাল শ্বশুরবাড়ি আসেন আখিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু রাজি হননি রফিকুল। শ্বশুরকে বুঝিয়েও কাজ না হয়নি। জোর করে স্ত্রীকে নিয়ে যেতে চাইলে বাঁধা দেন শাশুরি। তাঁকেও ফয়সাল মারধর করে বলে অভিযোগ। সেসময়ই পুলিশে খবর দেন আখি। পুলিশ আসছে খবর পেয়ে ঘরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় ফয়সাল। আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে আখির কাকা শাহ আলম হাওলাদারের বাড়িও। এনিয়ে শাহ আলমের স্ত্রী নুন নাহার বলেন, “মেয়ে দিতে না চাওয়ায় ফয়সাল তার শ্বশুরের ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি ঘর হওয়ায় সেই আগুন আমার ঘরেও লেগে পুড়ে গিয়েছে।”
ঘটনা প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলামের এক প্রতিবেশী সবুজ সরকার বলেন, “সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ফয়সাল তার শাশুরিকে মারধর করে। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার নিয়ে গেলে ফাঁকা ঘরে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায় সে।” বাউফল পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আঃ লতিফ খান বাবুল বলেন, “ফয়সাল মাদক কারবারী।” এই বিষয়ে বাউফল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, মাদকাসক্ত ফয়সাল দুটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। ফয়সালের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.