সুকুমার সরকার, ঢাকা: হাসিনা সরকারের আমলে পরিবহণ বিপ্লবের দিকে ধাবমান বাংলাদেশ। এক বছরের মধ্যেই স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে চালু হবে ট্রেন পরিষেবা। ফলে নদীমাতৃক দেশটির দুই অংশে যোগাযোগ আরও মজবুত ও সহজ হয়ে উঠবে।
পদ্মা সেতু (Padma Setu) নির্মাণ করেছে সরকারের সেতু বিভাগ। ব্রিজটিতে ট্রেন পরিষেবা চালু করার দায়িত্ব রেলের। এ লক্ষ্যে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন বসানো এবং স্টেশন ও অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণে আলাদা প্রকল্প নেয় রেল। এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে অর্থাগম হয়েছে চিনের। রেল জানিয়েছে, সমস্ত কিছু পরিকল্পনা মাফিক এগোলে আগামী বছর জুনে পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরু হবে। আগামী জুলাই মাসে সেতুর ওপর রেললাইন বসানোর কাজ শুরু হবে। শুরুতে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশের ট্রেন চালু করা হবে। পদ্মা সেতু ও এর দুই প্রান্তে রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। শুরুতে যানবাহনের সঙ্গে একই দিন রেল চালুর পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু রেললাইন বসানোসহ অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণকাজ এখনও পিছিয়ে আছে।
বলে রাখা ভাল, ১৬৯ কিলোমিটার নতুন রেলপথের কাজ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগ ঢাকার গেন্ডারিয়া থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া। দ্বিতীয় ভাগ মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা। শেষ ভাগে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত অংশ পড়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশ আগে চালুর কথা ছিল। এরপর পর্যায়ক্রমে ঢাকা থেকে মাওয়া এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশের কাজ শেষ হবে। এখন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মোট ৩০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া পদ্মা সেতুর (Padma Bridge) কাজের চুক্তিমূল্য ছিল প্রায় ১২ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। সেতুটি তৈরি হতে সময় লেগেছে ৯০ মাস ২৭ দিন। দিনরাত খেটে কাজ করেছেন প্রায় ১৪ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক, ইঞ্জিনিয়ার ও বিশ্লেষকদের মধ্যে প্রায় এক হাজার ২০০ জন দেশি, দুই হাজার ৫০০ জন বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার। শ্রম দিয়েছেন প্রায় ৭ হাজার ৫০০ দেশি শ্রমিক, আড়াই হাজার বিদেশি শ্রমিক এবং প্রায় ৩০০ দেশি-বিদেশি বিশ্লেষক। অবশেষে শনিবার সব শেষে স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেখলেন বাংলাদেশবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.