সুকুমার সরকার, ঢাকা: সেনা অভিযানের মুখে প্রাণভয়ে মায়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা। কিন্তু পালিয়ে নিস্তার মিলছে না রোহিঙ্গা যুবতীদের। অভিযোগ, পাচারচক্রের খপ্পরে পড়ছে তাঁরা। মোটা টাকার বিনিময়ে বিদেশে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে রোহিঙ্গা যুবতীদের। ইতিমধ্যেই পাচারচক্রের সঙ্গে জড়িত ৮ জনের হদিশ পেয়েছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: তথ্য-প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের আরও এক লেখক ইমতিয়াজ মাহমুদ]
জানা গিয়েছে, কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে রোহিঙ্গা যুবতীদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের বাংলা শেখানো হয়। এরপর ভুয়া তথ্যে দিয়ে তাঁদের পাসপোর্ট তৈরি করে তাঁদের পাঠানো হয় মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায়। অভিযোগ, এভাবেই গত এক বছরে চারশোরও বেশি রোহিঙ্গা যুবতীকে পাচার করা হয়েছে দেশের বাইরে। ইতিমধ্যেই, রোহিঙ্গা পাচার চক্রের মূল চক্রী-সহ আটজনকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের মধ্যে রহিম নামের এক যুবক ইতিমধ্যেই মালয়েশিয়া পালিয়ে গিয়েছে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে গত ১০ মে। ওই দিন রাজধানীর একটি ফ্ল্যাট থেকে ২৪ জন রোহিঙ্গা যুবতীকে উদ্ধার করেন ডিবি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পাচারকারী চক্রের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন রফিক ও মফিজ নামের দুই রোহিঙ্গা যুবক। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে বিভিন্ন মহিলাদের কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকা নিয়ে যায় তাঁরা। সেখান থেকে তাঁদের বিদেশে পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, এক জন মহিলা পিছু চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা নেয় এজেন্টরা। রোহিঙ্গা যুবতীদের নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তাঁদের পরিবারকে কুড়ি থেকে তিরিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, অধিকাংশ রোহিঙ্গা নারীকে প্রথমে ভারতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। আবার অনেককে সরাসরি মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পাঠানো হয়। এ বিষয়ে একজন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, “ভুয়ো তথ্য দিয়ে রোহিঙ্গারা বিদেশে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে অপরাধে জড়াচ্ছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমরা তদন্ত করছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.