Advertisement
Advertisement

Breaking News

জামাত শিবিরে তীব্র অন্তর্দ্বন্দ্ব, দল ছাড়লেন শীর্ষ নেতা

৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে দলের ভূমিকায় দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি রাজ্জাকের।

Top leader of Jamat resigned over inner clash
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 16, 2019 3:48 pm
  • Updated:February 16, 2019 8:29 pm  

সুকুমার সরকারঢাকা: জঙ্গি সংগঠনের মধ্যেই চরম অন্তর্দ্বন্দ্ব। অসন্তোষ এতই তীব্র হয়ে উঠল যে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাত-ই-ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক দল ছাড়লেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে দেশের লাখো লাখো মানুষকে হত্যার বিষয়টিতে এখন দলের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়্ছে। তার জেরেই রাজ্জাক সংগঠন ছাড়ছেন বলে দলের প্রধান মকবুল আহমদকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশের টেকনাফে আত্মসমপর্ণ ১০০ জন ইয়াবা পাচারকারীর

আবদুর রাজ্জাক তাঁর পদত্যাগের কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠনের ভূমিকাকে। তাঁর দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছেন যাতে একাত্তরের ভূমিকার কারণে সংগঠন জাতির কাছ ক্ষমা চায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং জামাত-ই-ইসলামির বিলুপ্তির প্রশ্নে দলের ভেতরে নতুন করে ওঠা আলোচনা ইতিমধ্যে অন্য মাত্রায় পৌঁছেছে। এর রেশ ধরে শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও বিশিষ্ট আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার যুক্তরাজ্যে থেকে তিনি জামাতের আমিরের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। অতীতে জামাত-ই-ইসলামি ছাত্র শিবিরে কয়েকবার ভাঙন ও বিদ্রোহের ঘটনা ঘটলেও, এই প্রথম জামাতের উচ্চপর্যায়ের কোনও নেতা সুনির্দিষ্ট কারণ জানিয়ে পদত্যাগ করলেন। একই সঙ্গে তা প্রেস বিবৃতির আকারে পাঠানো হয়। জামাত-ই-ইসলামির বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যে আবদুর রাজ্জাক একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে পরিচিত। পদত্যাগের পর তিনি নতুন কোনও সংগঠন করছেন কি না, তা নিয়ে দলের অন্দরে-বাইরে কৌতুহল দেখা দিয়েছে। যদিও জামাত এদিন এক বিবৃতিতে আবদুর রাজ্জাকের পদত্যাগে ‘ব্যথিত’ ও ‘মর্মাহত’ বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

Advertisement

এবারই শেষ! আর প্রধানমন্ত্রী হতে চান না শেখ হাসিনা

আবদুর রাজ্জাক পদত্যাগপত্রের শেষের দিকে লিখেছেন, ‘এখন থেকে আমি নিজস্ব পেশায় আত্মনিয়োগ করতে চাই। সেই সঙ্গে ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধিশালী ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব।’ দলের উচ্চপর্যায়ের সূত্র মারফত জানা গিয়েছে,  মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেওয়া, নতুন নামে দলের পুনর্গঠন সহ আরও কিছু কর্মপন্থা নিয়ে জামাতের ভেতরে একটি অংশ সক্রিয় হয়। মধ্যপন্থী হিসেবে পরিচিত এই অংশের বিরুদ্ধে তৎপর কট্টরপন্থী অংশও।  এনিয়ে জামাত দ্বিধাবিভক্ত হয়েছে। দলের আমিরকে পাঠানো চিঠিতে তিনি এও বলেছেন, যে ওই ইস্যুতে জামাতকে বিলুপ্ত করে দেওয়ারও প্রস্তাব করেছিলেন দলীয় ফোরামে। এছাড়া পদত্যাগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের আওতায় ইসলামিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক দল গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। কিন্তু সে দাবি অনুযায়ী জামাত নিজেকে এখনও পর্যন্ত সংস্কারী করে তুলতে পারেনি। চিঠিতে রাজ্জাক স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের ৪৭ বছর পরও দলের নেতৃবৃন্দ একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে না পারায় দলকেই দায়ী করেছেন। এনিয়ে রাজ্জাক ছাড়াও অনেকেই দলের বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে পদত্যাগের পথে হাঁটবেন বলে সূত্রের খবর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement