সুকুমার সরকার, ঢাকা: নাবালিকা ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের নিদান দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের (Bangladeh) আইনে। কিন্তু তাতেও থামছে না অপরাধের প্রবণতা। এবার বাংলাদেশের টাঙাইল জেলায় তিন স্কুলছাত্রীকে জঙ্গলের ধারে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগে ধৃত ১০ জনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ প্রায় ১ বছর পর চার্জশিট দাখিল করা হল।তবে ইতিমধ্যে ধৃতদের মধ্যে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। এবার নতুন আইন মেনে এদের শাস্তি হোক, এমনই চায় নির্যাতিতা পরিবারগুলি।
ঘটনা গত বছরের জানুয়ারির। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি স্থানীয় একটি স্কুলের চার ছাত্রী সকালে স্কুল থেকে উপজেলার পাহাড়ি এলাকা সাতকুয়ায় বেড়াতে যায়। ওইদিন দুপুরে কয়েকজন যুবক মিলে তাদের জোরপূর্বক বনের ভেতর নিয়ে যায়। ছাত্রীদের একজনকে আটকে রেখে তার সামনেই অপর তিনজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা। পরে তাদের জঙ্গলের ভিতর ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় এক অটোচালক ওইদিন সন্ধেয় জঙ্গল থেকে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় কুশারিয়া বাজারে নিয়ে আসে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ২৭ জানুয়ারি নির্যাতিত এক ছাত্রীর অভিভাবক আবুল কালাম অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছ’জনের বিরুদ্ধে ঘাটাইল থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার (তদন্ত) মহম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয় ধর্ষণের শিকার তিন শিক্ষার্থী। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন সময় সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের চারজন আদালতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। ধর্ষিতা তিন স্কুলছাত্রী ও গ্রেপ্তার হওয়া চার আসামির আদালতে দেওয়া জবানবন্দি অনুসারে ১০ জন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে শনাক্ত করা হয়। পরে নির্যাতিতা ছাত্রীদের ডাক্তারি পরীক্ষা ও আসামিদের ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম, রাসেল মিয়া, কবীর হোসেন, বাবুল, ইউছুব মিয়া, বাবলু মিয়া, সবুজ বাবু, আরিফ হোসেন, শাহিন মিয়া এবং শান্ত – সকলের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এদের সবার বাড়ি উপজেলার সন্ধানপুর, চানতারা-সহ বিভিন্ন গ্রামে। এদের মধ্যে আরিফ হোসেন ও শান্ত পলাতক রয়েছে। অভিযুক্ত শাহিন মিয়া এই অপরাধের পর পার্শ্ববর্তী চাপড়ি এলাকায় অটোরিকশা ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে মারা যায়। অভিযুক্ত শান্ত শিশু হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে শিশু আইনে আলাদা অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার আরও জানান, মহামারী করোনার কারণে এবং আসামিদের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল পেতে বিলম্ব হওয়ায় অভিযোগপত্র দাখিলে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.