প্রতীকী ছবি
সুকুমার সরকার, ঢাকা: গৃহযুদ্ধে পুড়ছে মায়ানমার। সংঘাতে জড়িয়েছে বার্মিজ সেনা তথা ‘টাটমাদাও’ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। এখনও নেভেনি সংঘর্ষের আগুন। প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই সংঘাতের আঁচ এসে লাগছে পড়শি দেশগুলোতেও। গত মাস তিনেক ধরে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন বহু সেনা। আশ্রয় নেওয়ার জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। ফলে ফের বড় সংখ্যায় শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কা করছে ঢাকা।
বলে রাখা ভালো, গত মার্চ মাসেই বাংলাদেশের নাইক্ষ্যংছড়িতে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৯ জন সদস্য। পালিয়ে আসা ২৯ জনকে নিরস্ত্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সকলকে রাখা হয় পুলিশের হেফাজতে। সীমান্ত পেরিয়ে এদেশের ঢোকার চেষ্টা করছেন রোহিঙ্গারাও। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন ঢুকেও পড়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের মায়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে সেনা। চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ক্রমবর্ধমান তহবিল সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে রোহিঙ্গাদের জন্য অনুদান আরও বৃদ্ধি করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি জানান, “নায্যতার ভিত্তিতে বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দায় ও দায়িত্ব গ্রহণ নীতি বাস্তবায়ন না করলে, শুধুমাত্র বাংলাদেশ, ইউএনএইচসিআর, আইওএম এবং ডব্লিউএফপি’র পক্ষে রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য কার্যক্রম চালানো এবং সুরক্ষা প্রদান করা সম্ভব হবে না।”
এদিকে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মহম্মদ নূর হাশেম নামে এক রোহিঙ্গা নেতা জানান, হিংসার কারণে রাখাইন প্রদেশ থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে ছোট নৌকায় করে নাফ নদী পার হয়ে ২০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তে চলে এসেছেন। রোহিঙ্গা ঢল ঠেকাতে সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। কক্সবাজারে শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক অতিরিক্ত কমিশনার আবু সালেহ মোহাম্মদ আনাদোলুকে জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। তারা অনুপ্রবেশ ঠেকিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত।
অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারের ২৮৫ জন সেনা সদস্য ফেরত যাবেন, আর দেশটি থেকে ১৫০ জন বাংলাদেশি ফিরবেন বলে জানালেন বিদেশমন্ত্রী ও আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ। ঢাকার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর ২৮৫ জন সদস্যকে মায়ানমারের জাহাজে নৌপথে ফেরত যাওয়ার ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে। মায়ানমারে আটকে পড়া ১৫০ জন বাংলাদেশিও একই জাহাজে ফেরত আসবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.