Advertisement
Advertisement

Breaking News

India and Bangladesh relation

চিনের পায়ে ‘মেনি বিড়াল’ ইউনুস! যে ৫ কারণে কাটছে না ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের শৈত্য

কূটনৈতিক সম্পর্কের কফিনে একের পর এক পেরেক পুঁতছেন ইউনুস নিজেই।

There are 5 reasons why India and Bangladesh relationship is in turmoil
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:April 4, 2025 2:33 pm
  • Updated:April 4, 2025 4:58 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেখা হল, কথাও হল। তবে প্রায় একবছর ধরে চলতে থাকা শৈত্যে প্রথামাফিক সৌজন্যতা ছাড়া উষ্ণতার কণামাত্র আভাস পাওয়া গেল না। ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিকাল এন্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন’ বা ‘বিমস্টেক’ সম্মেলনের ফাঁকে মোদি-ইউনুসের সাক্ষাতের পর ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, ইউনুস শাসিত বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক যে তিমিরে ছিল সেখানেই রয়ে গিয়েছে। হাসিনা আমলের বন্ধুত্বে ইউনুসের জমানায় যে ফাটল তৈরি হয়েছে তা ক্রমশ আরও চওড়া হচ্ছে। উগ্র মৌলবাদ তো বটেই, ভারত শত্রুর পায়ে ‘মেনি বিড়াল’ হয়ে উঠেছে বর্তমান বাংলাদেশ। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মত, মূলত ৫টি কারণ দুই দেশের সুসম্পর্কের মাঝে তৈরি করেছে পাহাড় প্রমাণ দেওয়াল।

১. উগ্র মৌলবাদ ও হিন্দু নির্যাতন
শেখ হাসিনার বিদায়ের পর বাংলাদেশজুড়ে নৈরাজ্যের ছবি দেখেছে গোটা বিশ্ব। হঠাৎ করেই যেন পাতাল ফুঁড়ে উঠেছে মৌলবাদের দল। জামাত, হিজবুত তাহরি, আনসারুল্লা বাংলার মতো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ‘খেলাফতের’ ডাক দিয়েছে। এই সংগঠনগুলিকে দমক করা তো দূর জঙ্গিনেতাদের ইন্ধন যোগাচ্ছে ইউনুসের সরকার। জেল ভেঙে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বহু জঙ্গিকে। এর পরই বাংলাদেশ জুড়ে শুরু হয়েছে হিন্দু নিধন যজ্ঞ। সংখ্যালঘু মহিলাদের উপর অত্যাচারের পাশাপাশি বাড়ি-ঘর পোড়ানো ও খুন সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে বাংলাদেশে। রিপোর্ট বলছে, জুন বিদ্রোহের পর মাত্র ৫ মাসে ওপার বাংলায় খুন করা হয়েছে ৩২ জন হিন্দুকে। ১৩ জন সংখ্যালঘু মহিলাকে ধর্ষণ ও গণধর্ষণ করা হয়েছে। হাজার হাজার মন্দির ধ্বংস করা হয়েছে। চলেছে হিন্দুদের উপর অকথ্য নির্যাতন। প্রতিবাদী মুখ চিন্ময় প্রভুকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের মতো ঘটনায় শুধু ভারত নয়, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে। উগ্র মৌলবাদ ও সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠা এই বাংলাদেশ ভারতের জন্যও বিপদের কালো মেঘ। যা দুই দেশের সম্পর্কের পথে অন্যতম কাঁটা।

Advertisement

২. ভারতের আশ্রয়ে ইউনুসের ‘শত্রু’ হাসিনা
বাংলাদেশে জুন বিদ্রোহের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন। বিরোধী শিবিরের সঙ্গে সর্বদল বৈঠকের পর সর্বসম্মতিতে তাঁকে এদেশে আশ্রয় দেয় মোদি সরকার। বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গণহত্যা-সহ বহু মামলা দায়ের হয়েছে। ইউনুস উপদ্বেষ্টা সরকারের দায়িত্বে আসার পর বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তিকে হাতিয়ার করে বারবার হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছে। তবে ভারত এ বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলে খুন করা হতে পারে। বর্তমান বাংলাদেশের ‘শত্রু’ ভারতের আশ্রিত হয়ে থাকা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতির পথে অন্যতম বাধা।

৩. মুক্তিযুদ্ধ ভুলে পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতা
বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারতের চাওয়ার কিছু নেই। বরং এতকাল বাংলাদেশের বিপদে-আপদে বড় দাদার মতো পাশে থেকেছে ভারত। যদি পাওয়ার কিছু থেকে থাকে তা হল কোনও শত্রুদেশ বাংলাদেশকে যেন ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার না করে। শুধুমাত্র দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশ ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সেই লক্ষ্যে গণহত্যাকারী পাকিস্তান সেনার হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার পর, মুক্তিযুদ্ধ ভুলে বাংলাদেশের পাক ঘনিষ্ঠতা মোটেই ভালো চোখে দেখছে না ভারত। সম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যের পাশাপাশি অস্ত্রের আমদানি শুরু করেছে ইউনুসের বাংলাদেশ। চোরাপথে যা পৌছে যাচ্ছে জঙ্গিদের হাতে। ভারতের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের এই পাক প্রেম ভালো চোখে দেখছে না ভারত।

৪. বাংলাদেশে চৈনিক চাল
হাসিনা আমলে বহুবার বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করেছে চিন। তবে ভারতবন্ধু হাসিনা কোনওবারই চিনকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়নি। বর্তমান সময়ে ভারতের প্রধান ‘শত্রু’ এই চিন। সীমান্তে আগ্রাসন ও বঙ্গোপসাগরে চৈনিক চাল ব্যর্থ করতে ভারত যেখানে সমুদ্রতীরবর্তী দেশগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে সেখানে চিনের সঙ্গে প্রতিবেশী বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা মোটেই ভালো চোখে দেখছে না ভারত। জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশে বন্দর বানাতে ইউনুসের সঙ্গে চুক্তিও করতে চলেছে ঢাকা। বাংলাদেশের মোংলায় আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা ইতিমধ্যেই ভেবে ফেলেছে চিন। চিনা বিনিয়োগ আনতে জিনপিংয়ের পায়ে মাথা ঠেকিয়েছেন ইউনুস। যা ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুতের পথে অন্যতম কাঁটা হয়ে উঠেছে।

৫. উত্তর-পূর্বের ৭ রাজ্য ভাঙার ছক
দিনকয়েক আগে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও অবনতি হয় ইউনুসের মন্তব্য ঘিরে। চিন সফর থেকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ইউনুসকে বলতে শোনা যায়, “ভারতের পূর্ব প্রান্তের সাতটি রাজ্য, যাদের সেভেন সিস্টার্স বলা হয়। ওই বিরাট অঞ্চল কিন্তু পাহাড় আর স্থলভাগে ঘেরা। সমুদ্রপথে যোগাযোগ করার উপায়ই নেই তাদের। বাংলাদেশই হল সমুদ্রপথের রাজা। তাই ওই এলাকায় চিনা অর্থনীতির বিস্তার ঘটতেই পারে।” এই মন্তব্যের ইঙ্গিত অত্যন্ত স্পষ্ট যে, ভারতের ৭ রাজ্য (সেভেন সিস্টার)কে ভেঙে ফেলতে চায় বাংলাদেশ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এই একই ইচ্ছা চিনের। যদিও সেই চৈনিক চাল বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এবার বাংলাদেশের মুখে এমন মন্তব্যে দুয়ে দুয়ে চার করতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না ভারতের। এই মন্তব্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের কফিনের অন্যতম পেরেক বলা যেতেই পারে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement