সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের সিলেটের হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে জঙ্গি হামলার (Terror Attack) ছক। হামলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। তৈরি হয়েছিল জঙ্গিদের অপারেশনাল টিমও। তবে পুলিশি তৎপরতায় সেই ছক ভেস্তে গিয়েছে। আগে থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ। চলছিল সন্দেহভাজনদের খোঁজ। তদন্তে নেমে মঙ্গলবার সন্ধে পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রসঙ্গত, ১৫ বছর আগে এই মাজারেই গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা।
গত ২৬ জুলাই সেই টিমই ঢাকায় গুলিস্তানে এক সার্জেন্টের মোটরসাইকেলের ঝুড়িতে গ্রেনেডসদৃশ বোমা রাখা হয়েছিল। এর পর ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) তদন্তে নামে। তদন্তে দেখা যায়, চার-পাঁচ জন জঙ্গি সার্জেন্টের মোটরসাইকেলে কীভাবে বোমা রাখতে হয়, সেটা রেইকি করছে। এর পরই পুলিশ সারাদেশে জঙ্গি হামলার ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে। তদন্ত করে সিলেটে জঙ্গিদের এই টিমের অবস্থান সনাক্ত করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। সিটিটিসি জানিয়েছে, গত সোমবার রাতে সিটিটিসি এবং পুলিশ সদরদপ্তরের ‘ল ফুল ইন্টারসেপশন সেলে’র (এলআইসি) একটি দল সিলেট নগরীর মিরাবাজারের উদ্দিপন এলাকার একটি বাড়ি থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করে। সে নব্য জেএমবির সিলেট আঞ্চলিক কম্যান্ডার ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। নাম নাইমুজ্জামান। তাকে গ্রেপ্তারের পর শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আরও চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে অন্যতম সাদি, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আর সায়েম সিলেট সরকারি মদনমোহন চাঁদ কলেজের ছাত্র। অন্য দুই জনের পরিচয় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত জানাতে পারেনি সিটিটিসি।
সিটিটিসির উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, গুলিস্তানে সার্জেন্টের মোটরসাইকেলে বোমা রাখার ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি গত বছর পল্টনে পুলিশের উপর বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত চলছে। এই দুই ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে খোঁজ পায় সিটিটিসি। এরপর সিলেটে অভিযান চালানো হয়। পরে সিলেটের মিনাবাজার, টুকের বাজার এবং দক্ষিণ সুরমা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের ঢাকায় আনা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে। সিটিটিসি সূত্রে খবর,ধৃত নাইমুজ্জামান পুলিশকে জানিয়েছে, তাদের সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে হামলার পরিকল্পনা ছিল। ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিল। ওই হামলা কখন হবে, কীভাবে করা হবে সেই উদ্দেশ্যে অপারেশনাল টিমও নির্ধারণ করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, এই মাজারে জঙ্গিরা বছর ১৫ আগে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে খতম করা। তিনি মাজারে গিয়েছিলেন প্রার্থনা করতে। গ্রেনেড বিষ্ফোরণে কয়েকজন মারা গেলেও আনোয়ার চৌধুরী সামান্য জখম হয়েছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.