সুকুমার সরকার, ঢাকা: রাজধানী ঢাকার অভিজাত পল্লি গুলশনে জঙ্গি হানার ঘটনা নড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। তারপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশজুড়ে শুরু হয় জঙ্গি দমন অভিযান। লাগাতার চলা অভিযানে ফলও মিলেছে। হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর সরকারি তৎপরতায় বাংলাদেশে অনেকটাই কমেছে জঙ্গি হামলার ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, একের পর এক অভিযানে জেএমবি, নব্য জেএমবি-সহ অন্যান্য জেহাদি সংগঠনগুলির কোমর ভেঙে গিয়েছে। ফলে এখন গুলশনের মতো জটিল তথা পরিকল্পিত হামলা করতে পারছে না জঙ্গিরা। সরকারি পরিসংখ্যান মতে, ২০১৩ সালে চারটি জঙ্গি হামলায় ৯ জন, ২০১৪ সালে পাঁচটি ঘটনায় তিন জন, ২০১৫ সালে ২৩টি ঘটনায় ২৫ জন, ২০১৬ সালে ২৫টি ঘটনায়, এর মধ্যে হোলি আর্টিজানও রয়েছে, ৪৭ জন নিহত হয়। ২০১৩-২০১৬ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত জঙ্গি হামলার সংখ্যা বেশি ছিল। হোলি আর্টিজানে হামলার পর সরকার ও পুলিসের বিশেষ পদক্ষেপ ও তৎপরতায় জঙ্গি হামলা দ্রুত কমে যায়। জঙ্গি মোকাবিলায় ঢাকা মহানগর পুলিশ ‘কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)’ গঠনের পর জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক দ্রুত ভেঙে যায়। এছাড়াও এলিট ফোর্স ব়্যাবের অভিযানও ভাল ফল দিয়েছে। সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও ছিল তৎপর।
এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি সুফল দিয়েছে। জঙ্গি মোকাবিলায় সরকার পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছে। ফলে লজিস্টিক সাপোর্ট বেড়েছে।২০০৪ ও ২০০৫ সালে যেসব জঙ্গি সাজা ভোগ করে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে তাদের পুনর্বাসনেও সরকার কাজ করছে। পুলিস তাদের কাউন্সিলিংয়ের মধ্যে রেখেছে। সব মিলিয়ে প্রাক্তন জঙ্গিদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতে সমস্ত সম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গতকাল বা বুধবরই হোলি আর্টিজান মামলায় সাজা ঘোষণা করে ঢাকার বিশেষ আদালত। ৮ আসামির মধ্যে ‘রাজীব গান্ধী’-সহ ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১ জনকে বেকসুর খালাস দেন বিচারক।
[আরও পড়ুন: হোলি আর্টিজান মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গির মাথায় আইএস টুপি, তুঙ্গে বিতর্ক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.