সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের সাতক্ষীরায় বিশেষভাবে সক্ষম এক তরুণীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। রাস্তা দিয়ে জোরে গান বাজিয়ে যাওয়াই নাকি ছিল তাঁর অপরাধ। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হলেন সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন। বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত বিতর্কিত এই লেখিকা গোটা ঘটনা সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি বিঁধেছেন ‘ভিআইপি’দের।
জানা গিয়েছে, নিহত তরুণীর নাম রজিনা সুলতানা (২০)। ঘটনার দিন সকালে তিনি রাস্তা দিয়ে একটি স্পিকারে জোরে গান বাজিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই এলাকারই বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন তাঁর বাড়ির সামনে জোরে গান বাজানোর অভিযোগ করে হাতুড়ি দিয়ে রজিনার মাথায় বেশ কয়েকটি আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রজিনার। এই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে আজ ফেসবুকে পোস্ট করেন তসলিমা। ক্ষোভ উগরে তিনি লেখেন, ‘সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের থানাঘাটা গ্রামের রাস্তা দিয়ে স্পিকারে গান বাজিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল রজিনা সুলতানা নামের এক প্রতিবন্ধী তরুণী। এলাকার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শ্রেণির ছাত্রী ছিল রজিনা। কিন্তু গান বাজনা থানাঘাটের ইলিয়াস হোসেনের পছন্দ নয় মোটেও। ইলিয়াস গান বাজনা ব্যাপারটাকেই ঘৃণা করে। ইলিয়াস তাঁর বাড়ির সামনে জোরে গান কেন বাজিয়েছে, এই অভিযোগ করে হাতুড়ি দিয়ে রজিনার মাথায় আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই রজিনার মৃত্যু হয়। সমন্বয়করা ভিআইপি। তাঁরা পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। সাধারণ মানুষ মনে করছে যাকে পছন্দ হবে না, তাকে পিটিয়ে হত্যা করাই আধুনিকতা। বর্বরতাই আজ এ দেশে আধুনিকতা বটে।’ সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তসলিমার এই পোস্ট।
ঘটনার দিন রজিনা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়তেই স্থানীয়রা ধরে ফেলে অভিযুক্ত ইলিয়াসকে। তাকে আটক করে মারধর করা হয়। পরে র্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পে খবর দেন স্থানীয়রা। র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল এসে ইলিয়াস ও তার বাবা একরামুল হোসেন-সহ পাঁচজনকে আটক করে। স্থানীয়রা জানান, রজিনা প্রায় বাড়ির সামনে দিয়ে গান বাজাতে বাজতে যেতেন। গান না বাজানোর জন্য বললে তিনি উলটোপালটা বলতেন। এদিন গান বাজিয়ে যাওয়ার সময় নিষেধ করলে তা না শুনে রজিনা ইলিয়াসকে গালিগালাজ করে। এতে রেগে সে হাতুড়ি দিয়ে রজিনার মাথায় আঘাত করে। সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মমতাজ মুজিদ জানান, নিহত রজিনাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁর মাথায় বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.