সুকুমার সরকার, ঢাকা: গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষা ও গোপনীয়তার মামলায় সুইস ব্যাংকগুলির জুড়ি মেলা ভার। তাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কালো টাকায় রীতিমতো ফুলেফেঁপে উঠছে তারা। জানা গিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিকের। ২০১৯ সালে ওই ব্যাংকগুলিতে বাংলাদেশিদের মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৩০ লক্ষ ফ্র্যাংক। বাংলাদেশের মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ ৫ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা।
২০১৮ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের সঞ্চয় ছিল ৫ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ১৩২ কোটি টাকা কমেছে। বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তবে কোনও বাংলাদেশি যদি তার নাগরিকত্ব গোপন রেখে টাকা জমা করে থাকেন, সেই তথ্য এই প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগ না হওয়ায় পুঁজি পাচার হচ্ছে। আমানত রাখার ক্ষেত্রে এ বছরও বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে ব্রিটেন। তবে আলোচ্য সময়ে সুইস ব্যাংকে সারা বিশ্বের আমানত বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর ও বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মহম্মদ রাজি হাসান বৃহস্পতিবার বলেন, “এই আমানতের বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি অংশ হল ব্যক্তিগত আমানত। তবে তাও আস্তে আস্তে কমছে। সরকারের তরফে পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বিভিন্ন চেষ্টা চলছে। এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার। তবে যেহেতু আমরা এগমন্ট গ্রুপের সদস্য, তাই সেখান থেকে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেভাবেই বিভিন্ন চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ থেকে নানাভাবে অবৈধ উপায়ে পাচার হওয়া অর্থ যেমন সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা হয়, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকেরাও দেশটিতে অর্থ জমা রাখেন। তাই সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশিদের মোট অর্থের মধ্যে বৈধ–অবৈধ সব অর্থই রয়েছে।” বিশ্লেষকদের মতে, সাধারণত সুইস ব্যাংক অর্থের উৎস গোপন রাখে। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমা রাখে। তবে কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলিতে ভারতীয়দের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ কিছুটা কমে গিয়েছে। তার কারণ ভারত সরকারের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের এ সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদানের ব্যবস্থা আছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.