সুকুমার সরকার, ঢাকা: নিউ ইয়র্কে বোমা কাণ্ডে আকায়েদ উল্লার ঢাকায় বসবাসকারী স্ত্রী জান্নাতুল ফিরদৌস জুঁই, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালককে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশ আজ, মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার ধানমণ্ডি সংলগ্ন জিগাতলার বাড়ি থেকে তাঁদের মিন্টু রোডের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে টাইমস স্কোয়্যারের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে সোমবার বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশের নাগরিক আকায়েদ উল্লাকে গ্রেপ্তার করে নিউ ইয়র্ক পুলিশ। আকায়েদ উল্লার স্ত্রী ছয় মাসের ছেলেকে নিয়ে ঢাকার জিগাতলা মনেশ্বর রোডে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আকায়েদ উল্লা গত বছরের জানুয়ারি মাসে রাজধানীর হাজারিবাগের জিগাতলায় বিয়ে করে। তার শ্বশুর বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের একটি দোকানে কাজ করেন। আকায়েদ উল্লার বাড়ি চট্টগ্রামে। চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর সে বাংলাদেশে এসেছিল। জিগাতলার মনেশ্বর রোডের বাড়ির মালিক রহিমা ইসলাম জানান, ওই পরিবারটি ১৯৯৭ সাল থেকে ভাড়া থাকে। পরিবারটি স্বচ্ছল নয়। গত বছর তাঁদের মেয়ের বিয়ে হয় আকায়েদের সঙ্গে। বিয়ের পর এ বছর জুনে একটি ছেলে হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে আকায়েদ এখানে এসে এক মাস ছিল। কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সিটির উপ কমিশনার সাইফুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, তিনজনকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মনেশ্বর রোডের বাড়িটিতে ছয় মাস বয়সি সন্তানকে নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে আকায়েদের স্ত্রী। চট্টগ্রামের আকায়েদ সাত বছর ধরে মার্কিন মুলুকে রয়েছে।
আকায়েদের নাম প্রকাশের পর বাংলাদেশে তার স্বজনের অবস্থান নিশ্চিত করতে পুলিশ মাঠে নামে। মঙ্গলবার দুপুরে তারা আকায়েদের শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা পায়। ঢাকার হাজারিবাগ থানার জিগাতলার মনেশ্বর রোডের ১০/১ রহিমা মঞ্জিলের বাড়িতে আকায়েদের শ্বশুর জুলফিকার হায়দার, শাশুড়ি মাহফুজা আকতার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ভাড়া থাকেন। ওই বাড়ির দারোয়ান মোফাজ্জল জানান, ২০১৬ সালে বিয়ের পরে আকায়েদ চলে যায় যুক্তরাষ্ট্রে। চলতি বছরের জুন মাসের ১০ তারিখে সন্তান হয়। খবর পেয়ে সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখ বাংলাদেশে আসে সে। ফিরে যায় অক্টোবরের ২২ তারিখ। আকায়েদের খুড়তুতো ভাই এমদাদ উল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এছাড়া আকায়েদের আত্মীয়রা আর কোথায় রয়েছেন সেই বিষয়েও তথ্য নিচ্ছে পুলিশ। স্বজনদের থেকে পাওয়া যেসব তথ্য পুলিশের কাছে আছে তা হচ্ছে, আকায়েদ উল্লার বাবা প্রয়াত মহম্মদ সানাউল্লা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মুসাপুর ইউনিয়নে। প্রায় তিন দশক আগে তার বাবা সন্দ্বীপ ছেড়ে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে যান। এরপর ২০১১ সালে তারা সপরিবারে আমেরিকা চলে যান। দুই বছর আগে সানাউল্লা মারা গিয়েছেন।
এদিকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা জানান, আকায়েদের বাবা ২৭ বছর আগে পরিবার নিয়ে ঢাকার হাজারিবাগ ট্যানারি এলাকায় চলে যান। সেখানে সন্দ্বীপ কলোনিতে তারা থাকতেন। সানাউল্লার একটি ছোট দোকান ছিল। আকায়েদ দুই বছর আগে সন্দ্বীপে এসেছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.