সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লড়াই ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। যে উদ্দেশ্যে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রূপ নেয় গণ আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার দাবি পূরণ হয়েছে। সরকারও বদলেছে। সেই নতুন বাংলাদেশেই এখন কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে সাংবাদিকদের! কবি-সাহিত্যিকদের উপর ঝুলছে খাঁড়া! সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি মামলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন লেখক শাহরিয়ার কবির। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা বলে দিয়েছেন, ফ্যাসিবাদী কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু কারা ফ্যাসিস্ট এই বিচার কে করবে? এটাই কি ‘স্বাধীন’ বাংলাদেশ? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
প্রাক্তন শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম। এখন তিনি মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা। নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর থেকে একের এক মামলা হচ্ছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। হিংসার শিকার হচ্ছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে হিংসার ঘটনায় ৫২ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্ত আরও বহু। কবি, সাহিত্যিক, বিশিষ্টজনেরাও আশঙ্কায় রয়েছেন। বুধবার এনিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়েছিলেন নাহিদ ইসলাম। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, “যাঁরা বিভিন্ন লেখনী ও মতামতের মাধ্যমে জনমত তৈরি করে গণহত্যার পক্ষে পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন এবং গণহত্যার জন্য উসকানি দিয়েছেন, তাঁদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। কেবল সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও কবি পরিচয়ে কেউ রেহাই পাবেন না। সকলের বিচার করা হবে।”
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলা সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে নাহিদ বলেন, “মামলাগুলো সরকার করছে না। জনগণ তাদের জায়গা থেকে করছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত শত্রুতার জায়গা থেকেও মামলা করা হচ্ছে। সেই জায়গা থেকে আমরা নির্দেশ দিয়েছি এবং আশ্বস্ত করেছি যে এই মামলাগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে পর্যালোচনা করা হবে। তদন্ত করে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত না হলে তাঁকে মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হবে। আমি তাদের বলেছি, যদি কোনও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয় তাহলে তাঁর ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয়ে বিস্তারিত পাঠাবেন। আমরা তাঁর বিষয়টি দেখব।”
উল্লেখ্য, সোমবার রাত ১২টা নাগাদ ঢাকার বাড়ি থেকে শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়র। বাংলাদেশে স্বাধীনতা-বিরোধী রাজাকার-আল বদর নেতাদের বিচারের দাবিতে বারবার সরব হয়েছেন তিনি। এছাড়াও মৌলবাদীদের অপছন্দের এই জনপ্রিয় লেখক বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষার আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। এই কারণে জামাত যখনই ক্ষমতার অলিন্দে এয়েছে, তখনই আক্রান্ত হয়েছেন শাহরিয়র। আর এই বর্তমান সরকারও জামাতের ইশারায় চলছে, এই অভিযোগ খোদ হাসিনার প্রধান প্রতিপক্ষ খালেদা জিয়ার দল বিএনপির। বাস্তবেই মৌলবাদ-বিরোধী হিসাবে পরিচিত কয়েকশো মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত কয়েক সপ্তাহে। সাংবাদিকদেরও নানা মামলার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.