Advertisement
Advertisement
ঢাকেশ্বরী দেবী

কাত্যায়ণী রূপে আটশো বছর ধরে ওপার বাংলায় পূজিত হচ্ছে মা ঢাকেশ্বরী

১২০০ খ্রিষ্টাব্দের এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন রাজা বল্লাল সেন।

Since 1200 ad Dhakeswari Debi getting Worship in Bangladesh's Dhaka
Published by: Tanujit Das
  • Posted:September 28, 2019 8:09 pm
  • Updated:September 29, 2019 2:49 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: আটশো বছর আগে থেকে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজিত হন মা দুর্গা। শোনা যায়, শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মূল বিগ্রহের উচ্চতা দেড় ফুটের মতো৷ দেবীর দশ হাত, কাত্যায়ণী মহিষাসুরমর্দিনী রূপে অবস্থান করছেন দেবী। পাশে রয়েছেন লক্ষ্মী, সরস্বতী এবং নিচে কার্তিক ও গণেশ। বাহন রূপে পশুরাজ সিংহ দণ্ডায়মান যার ওপর দাঁড়িয়ে দেবী মহিষাসুরকে বধ করেছেন। অর্থাৎ শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দুর্গাপুজো হয়ে আসছে এই মন্দিরে।

[ আরও পড়ুন: সেতু সোশ্যাল মিডিয়া, বাংলার যুবকের তৈরি ফাইবারের দুর্গা পাড়ি দিল নভি মুম্বই ]

Advertisement

জানা গিয়েছে, ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন রাজা বল্লাল সেন। কালক্রমে এই মন্দিরই ঢাকার জাতীয় মন্দির হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। সে কারণে এখানেই জাঁক-জমকের সঙ্গে দুর্গাপুজো হয়ে থাকে। আর ঢাকার সবচেয়ে প্রাচীন মন্দির হল ঢাকেশ্বরী মন্দির। বলা হয়ে থাকে এই মন্দিরের নাম থেকে ঢাকারও নামকরণ হয়েছে। ঢাকার নামকরণ হয়েছে “ঢাকার ঈশ্বরী” অর্থাৎ ঢাকা শহরের রক্ষাকর্ত্রী দেবী হতে। প্রাচীন এই মন্দিরে ঘুরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে ভারতের বিশিষ্ট ধর্মগুরু ও রাজনীতিবিদগণ। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নারায়ণপুরে (যা আজকে লালবাগ নামে অভিহিত) অবস্থিত একটি মন্দির। ঢাকেশ্বরী মন্দিরটি প্রথম থেকেই চুন-বালির গাঁথনিতে নির্মিত। পুরাণ অনুযায়ী, রাজা আদিসুর তার এক রানিকে বুড়িগঙ্গার এক জঙ্গলে নির্বাসন দেন। জঙ্গলে রানি এক পুত্র সন্তান প্রসব করে৷ যাঁর নাম হয় বল্লাল সেন। জঙ্গলেই বেড়ে ওঠেন বল্লাল সেন। শৈশবে জঙ্গলের মধ্যে বল্লাল সেন একটি দেবী মূর্তি পান (মতান্তরে, রাজ ক্ষমতায় বসার পর এই জঙ্গলে তিনি মূর্তিটি পান)। বল্লাল সেন বিশ্বাস করতে শুরু করে জঙ্গলে সকল বিপদ-আপদ থেকে এই দেবীই তাকে রক্ষা করছে। পরে বল্লাল সেন রাজ ক্ষমতায় আসীন হলে ওই দেবীর মূর্তির একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মূর্তিটি জঙ্গলে ঢাকা অবস্থায় পেয়েছিলেন যায় বলে দেবীর নাম হয় ‘ঢাকা+ঈশ্বরী’ বা ‘ঢাকেশ্বরী। মন্দিরটিও ‘ঢাকেশ্বরী মন্দির’ নামে পরিচিতি পায়।

[ আরও পড়ুন: দুর্গা আরাধনায় সাবেকিয়ানাই ধরে রেখেছে ঐতিহ্যের শহর টাকি ]

অনেকে আবার বলেন, রাজা বিজয় সেনের স্ত্রী স্নান করার জন্য লাঙ্গলবন্দ গিয়েছিলেন। ফিরে আসার সময় তিনি একটি পুত্রকে জন্ম দেন, যিনি বল্লাল সেন বলে পরিচিত হন। সিংহাসনে বসার পর, বল্লাল সেন তাঁর জন্মস্থানকে মহিমান্বিত করার জন্য এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। কিংবদন্তী যে বল্লাল সেন একবার দেবতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এরপরই তিনি দেবীকে আবিষ্কৃত করেন এবং একটি মন্দির নির্মাণ করেন৷ মূর্তিটি ঢাকা ছিল বলে ঢাকেশ্বরী নামকরণ হয়। আরেক প্রবাদ মতে, দেবী সতী দেহের একান্নটি খণ্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে যে সব স্থানে পড়েছিল সে স্থানগুলো এক একটি পীঠস্থানে পরিণত হয়। সতীদেহ ছিন্ন হওয়ার পর তার কিরিটের ডাক (উজ্জ্বল গহনার অংশ) এই স্থানে পড়েছিল তাই এটা উপপীঠ। সেই ডাক থেকেই ঢাকেশ্বরী নামের উৎপত্তি হয়। ১৫৯৪-১৬০৬ সাল পর্যন্ত বাংলার সুবেদার থাকাকালীন,মানসিংহ জরাজীর্ণ মন্দিরটির সংস্কার করেন। এসময় তিনি মন্দির প্রাঙ্গণে ৪টি শিবলিঙ্গ স্থাপন করেন। এই মন্দিরের দেবী ঢাকেশ্বরীর আসল ৮০০ বছরের পুরনো বিগ্রহটি কলকাতার কুমারটুলি অঞ্চলে দুর্গাচরণ স্ট্রিটের শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী মাতার মন্দিরে রয়েছে। দেশ ভাগের সময় ওটিকে ঢাকা থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement