সুকুমার সরকার, ঢাকা: মুখ ফিরিয়েছে বিশ্ব। জায়গা দিতে অপারগ বাংলাদেশ। তাই বাধ্য হয়ে দু’মাস ধরে প্রায় ৮০০জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিয়ে মাঝ সমুদ্রে ভাসছে একটি জাহাজ। মায়ানমার থেকে পালিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য জাহাজে করে সাগরে পাড়ি দিয়েছিলেন রোহিঙ্গারা। কিন্তু বন্দরে ঢোকার অনুমতি দেয়নি সে দেশের কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লক্ষ শরণার্থীর বোঝায় রীতিমতো বিপাকে বাংলাদেশ। এর আগে আন্তর্জাতিক মঞ্চের অনুরোধে সাগরে ভাসতে থাকা এমনই এক শরণার্থী বোঝাই জাহাজ থেকে পাঁচশো উদ্বাস্তুকে থাকার অনুমতি দিয়েছিল ঢাকা। কিন্তু সেবার বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এমনিতেই লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ হিমশিম খাচ্ছ্। তাই আর কোনও শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া হবে না। ফলে সাগরে ভাসমান জাহাজটির যাত্রীদের যাওয়ার কোনও জায়গা সেই অর্থে নেই।
মানব পাচারকারী দালাল চক্রের সূত্রে জাহাজটি মায়ানমারের উপকূলে রেঙ্গুনের কাছাকাছি কোথাও আছে বলে জানা গিয়েছে। দু’মাস ধরে এই জাহাজে থাকা আত্মীয়-পরিজনদের কোনও খোঁজখবর না পেয়ে চারটি পরিবারই ভীষণ উদ্বিগ্ন। গত এপ্রিলে রোহিঙ্গা শরণার্থী বোঝাই আরও দুটি জাহাজ একইভাবে মালয়েশিয়ায় ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিল। সেই দু’টি জাহাজে প্রাণ হারাতে হয়েছিল বহু শরণার্থীকে। টেকনাফের নয়াপাড়া ক্যাম্পের শরণার্থী হালিমা খাতুন জানান, তার ছেলে মাহমুদুল্লাহ (১৮) ওই জাহাজে উঠেছিল মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য। তারপর গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে আর কিছুই জানেন না ছেলে কোথায়-কেমন আছে।হালিমা খাতুনের ছয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে মাহমুদুল্লাহই একমাত্র পুত্র সন্তান।হালিমা খাতুন জানান, দালালকে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল ছেলেকে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য। এবার কী করবেন বা কার কাছে যাবেন তাঁরা, কিছুই ভেবে উঠতে পারছেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.