সুকুমার সরকার, ঢাকা: দুদিন আগে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করে ঢাকা। কিন্তু, তার দুদিনের মধ্যেই এই তালিকা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কারণ, ওই তালিকায় নাম উঠেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘হক চাচা’ মজিবুল হকের। যদিও তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তৎকালীন বরগুনা মহকুমা মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন।
রবিবার, ঢাকার অফিস থেকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে সাহায্যকারী রাজাকার, আলবদর, আলশামস সদস্যদের একটি তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।। প্রকাশিত এই তালিকায় মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের তৎকালীন পাথরঘাটা থানার আহ্বায়ক মহম্মদ মজিবুল হকের নামও রয়েছে।
যদিও আমৃত্যু মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত মজিবুল হক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যাঁকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন। তাই তাঁর নাম রাজাকারের তালিকায় আসায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন বরগুনার বাসিন্দারা। মঙ্গলবার এর প্রতিবাদে বরগুনা শহরে বিক্ষোভও দেখান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া স্থানীয়রা।
ওই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মজিবুল হকের আত্মীয় ও সহযোদ্ধারা জানান, রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আওয়ামি লিগের সদস্য ছিলেন মুজিবল হক। ১৯৭০ সালে পাথরঘাটা থানা আওয়ামি লিগের প্রতিষ্ঠার সময় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তারপর ১৮ বছর ধরে এই পদে ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাথরঘাটা-বামনা সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামি লিগের নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াই করেন। তাঁর মতো একজন মানুষের নাম রাজাকার তালিকায় ওঠায় আমরা ব্যথিত। কী করে এই ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারছি না।
আজীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করে যাওয়া ‘চাচা’র ৮ সন্তান নিয়ে টানাটানির মধ্যে সংসার চলত। তবুও সততার সঙ্গে কোনওদিন আপোস করেননি। নিজের টানাটানির সংসার নিয়ে নিয়ে তাঁর বিন্দুমাত্র আক্ষেপও ছিল না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.