সুকুমার সরকার, ঢাকা: ঢাকা-দিল্লি নদী আলোচনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সংঘাত বেড়েছে ভারত সরকারের। রাজ্য-কেন্দ্র এই সংঘাতের মাঝেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) জানিয়ে দিলেন, তিস্তার জলবণ্টন নয়, মহাপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুদেশের মধ্যে। বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু ও আঞ্চলিক অংশীদার ভারত। দিল্লি ও ঢাকা আগামিদিনে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
দুদিনের ভারত সফর সেরে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার ঢাকায় গণভবনে এই গুরুত্বপূর্ণ সফর নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন হাসিনা। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা তিস্তা প্রকল্প নিয়েছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চিন ও ভারত আলাদা আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে। আমাদের দেশের জনগণের জন্য যে প্রস্তাবটি অধিক লাভজনক ও উপযোগী হবে সেটাই আমরা গ্রহণ করব। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা পথ প্রশস্ত করা নিয়েই আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের দুই দেশের এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সবরকম সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।”
গত ২১ জুন ভারতে যান হাসিনা। দিল্লি বিমানবন্দরে জাঁকজমকপূর্ণভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয় তাঁকে। বিমানবন্দরে হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং। সেনিয়ে এদিন হাসিনা বলেন, “২১ জুন দিল্লির বিমানবন্দরে আমাকে বর্ণাঢ্য অভ্যর্থনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শংকর আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া ভারতের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল আমার সঙ্গে দেখা করেন। তারা দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের সম্ভাবনা ও পন্থা নিয়ে আলোচনা করে। তাদের কথা হয় আমার সফরসঙ্গী ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও।”
এছাড়াও, এই সাংবাদিক সম্মেলনে উঠে আসে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তির বিষয়টিও। এনিয়ে হাসিনা বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি আমি করেছি। পৃথিবীতে যত শান্তি চুক্তি হয়েছে খুঁজে বের করুন কয়টিতে অস্ত্রধারীরা আত্মসমর্পণ করেছে। আমি পার্বত্য চট্টগ্রামে শুধু শান্তি চুক্তি করিনি, ১ হাজার ৮০০ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। আমি তাদের সকলকে সামাজিকভাবে, আর্থিকভাবে সাবলম্বী করেছি। ২৪ হাজার শরণার্থী ছিল ভারতে, তাদের সকলকে ফিরিয়ে এনেছি।”
বলে রাখা ভালো, গত ৯ জুন, রেকর্ড গড়ে তৃতীয়বারের জন্য শপথ নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দিল্লিতে তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাসিনা। তার দিক ১০ দিনের ব্যবধানে ফের ভারতে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আগামিদিনে দুদেশের সম্পর্ককে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে ও বন্ধুত্বকে আরও মজবুত করতে এই সফর ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.