সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত ‘আগস্ট বিপ্লবে’ই যবনিকা পতন হল হাসিনার সরকারের। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিজের বাসভবনে সপরিবারে খুন হয়েছিলেন শেখ মুজিবর রহমান। কাকতালীয় ভাবে প্রায় ৫০ বছর পরের এক আগস্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানের সাক্ষী হল বাংলাদেশ। যার জেরে দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন মুজিবকন্যা শেখ হাসিনাকে।
হেলিকপ্টরে হাসিনা-রেহানা দুই বোন দেশ ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দখল নেয় উন্তত্ত জনতা। শুরু হয় ‘গণভবন’-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মুজিবের মূর্তি গুড়িয়ে দেওয়া। যাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন ইস্টবেঙ্গলে খেলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রাক্তন ফুটবলার আসলাম। এদিন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে’ও আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। সূত্রের খবর, জাদুঘরের মূল্যবান স্মারক তছনছ করেছে জনতা। তাহলে কি হাসিনার কথাই ঠিক, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলতে পাকিস্তানপন্থী বিএনপি, জামাতই তলে তলে ছাত্র বিক্ষোভ পরিচালনা করেছে?
বাংলাদেশের রাজনীতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, আওয়ামি লিগ সুপ্রিমো হাসিনাই আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী। প্রথমত, গণতন্ত্রের প্রশ্ন তুলে হাসিনা বিরোধিতা সক্রিয় হচ্ছিল দেশে। দ্বিতীয়ত, বিএনপি, জামাতের মতো বিরোধী শক্তি কোটা আন্দোলনকে কাজে লাগায়। তারা ছাত্রদের সরকার বিরোধিতায় ব্যাপক ভাবে ইন্ধন দিয়েছে। তাছাড়া হাসিনা জনতার আবেগ বুঝতে পারেননি। সেই কারণেই লাঠি-গুলি-হুঙ্কারের ওষুধেও রোগ সারেনি। সব মিলিয়ে নতুন করে ছাত্রবিক্ষোভ এবং হিংসা ছড়ানোয় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন হাসিনা।
The Prime Minister of Bangladesh Sheikh Haseena Ji met Smt Sonia Gandhi Ji, Rahul Gandhi Ji and Priyanka Gandhi Ji during her New Delhi visit. pic.twitter.com/pn2Ny3jccQ
— Sama Ram Mohan Reddy (@RamMohanINC) June 10, 2024
অথচ, ২০১৮ সালে কোটা বা সংরক্ষণ নীতির সংস্কার করেছিলেন হাসিনাই। এবারেও প্রবল জনরোষের মুখে হাসিনা সরকারের সম্মতিতেই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দেয়। যদিও এর পরেও ন’দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর সংগঠকরা। ধৃত আন্দোলনকারীদের মুক্তি, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার, কোটা আন্দোলনে হামলাকারীদের শাস্তি-সহ আরও বিভিন্ন দাবি ছিল আন্দোলনকারী ছাত্রদের।
সেই দাবি না মেনে পুলিশ ও আধাসেনা দিয়ে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করেন হাসিনা। এই ভুল সিদ্ধান্তের ফলেই বিক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। নতুন করে হিংসায় মৃত্যু হয় ৩০০-র বেশি মানুষের। পাশাপাশি জনরোষে দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন হাসিনা। এক ১৫ আগস্টে নিজের বাসভবনে খুন হয়েছিলেন মুজিবর রহমান। অর্ধ শতক পরে তাঁর মেয়েকেও গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছাড়তে হল এক আগস্টে, ৫ তারিখে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.