সুকুমার সরকার, ঢাকা: আন্তর্জাতিক মঞ্চে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিতে জোর মোদি সরকারের। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ (Bangladesh) যাচ্ছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। কূটনৈতিক সূত্রে খবর, আগামী জুলাই মাসে ভারতে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সফরের প্রস্তুতির জন্যই জয়শংকরের ঢাকা সফর।
জানা গিয়েছে, দু’দিনের সফরে ২৮ এপ্রিল ঢাকা পৌঁছবেন জয়শংকর। তারপর ভুটানের উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। এই সংক্ষিপ্ত সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। জয়শংকরের ঢাকা সফরে ভারত-বাংলাদেশ চলতি দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলির সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই, ইউক্রেন পরিস্থিতি এবং ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহযোগিতা নিয়ে কথা হবে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে নয়াদিল্লিতে ‘ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট কনসাল্টেটিভ কমিটি’র বৈঠক হবে আগামী মে মাসের শেষে। এর পর জুনে গুয়াহাটিতে ‘ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ’। সেখানে পার্শ্ববৈঠকে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের মুখোমুখি বসবেন জয়শংকর।
বলে রাখা ভাল, কূটনৈতিক ও কৌশলগত অবস্থানের জন্য ভারতের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব অনেকটাই। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকারের আমলে নয়াদিল্লি-ঢাকা সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। তবে সম্পর্কে খিঁচ যে একেবারে নেই তা বলা চলে না। করোনা টিকা থেকে শুরু করে এনআরসি ও তিস্তা জলবণ্টন নিয়ে বংলাদেশে অনেকটাই অসন্তোষ রয়েছে। এই বিষয়ে ঢাকার কূটনৈতিক মহলে মনে করা হচ্ছে, ভারত নিয়ে যদি বাংলাদেশের আমজনতার ক্ষোভ থাকে, তা হলে এই সংযোগ-প্রকল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সেই বিষয়গুলি নিয়েই হাসিনার সফরকালে আলোচনা হয়ে পারে বলে খবর।
উল্লেখ্য, বংলাদেশে চিনা প্রভাব নিয়েও শঙ্কিত সাউথ ব্লক। বাংলাদেশকে বাগে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে জিনপিং প্রশাসন। আর কার্যসিদ্ধিতে কমিউনিস্ট দেশটির হাতিয়ার ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্প (OBOR)। সেই প্রকল্পের অন্তর্গত বাংলাদেশে পরিকাঠামো নির্মাণ করতে চায় চিন। ২০১৬ সালে চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পে যোগ দেয় বাংলাদেশ। সেই চুক্তি মতে, হাইওয়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে ঢাকাকে ১.১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক মদত দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে শি জিনপিং প্রশাসন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, চিন আগ্রহ প্রকাশ করলেও ‘ভারতের আপত্তিতে’ এই প্রকল্প নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আগ্রহ প্রকাশ করেনি হাসিনা সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.