সুকুমার সরকার, ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) সংখ্যাগুরুদের একটা বড় অংশের আপত্তি। এ নিয়ে তরজা চলছে এখনও। এবার পরিস্থিতি দেখতে নিজেই আসরে নামছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। তিনি জানেন পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়। শনিবার এ কথা জানিয়েছেন আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক, দেশের সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেইসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, ”দেশ স্বাধীন হলেও গণতন্ত্র এখনো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। একটি মহল মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা আসলে গণতন্ত্রের শত্রু।”
এদিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামা, মাশায়েখ ও মুফতিরা যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন ফের ভাস্কর্য তৈরির বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, মানুষ বা অন্য যে কোনও প্রাণীর ভাস্কর্য অথবা মূর্তি নির্মাণ, স্থাপন ও সংরক্ষণ পূজার উদ্দেশ্যে না হলেও সন্দেহাতীতভাবে কঠোরতম গুনাহ। আর যদি পূজার উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে তা স্পষ্ট শিরক। এ ধরনের শরিয়ত বিরোধী কাজ মুসলমানদের জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। যারা বলছেন মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয়, তারা ভুল বলছেন। সত্য গোপন করছেন।
এরপর সংগঠনের সদস্যরা আরও বলেন যে অন্য কোনও মুসলিম দেশে ভাস্কর্য থাকলেও সেই উদাহরণ দিয়ে ভাস্কর্যকে সমর্থন করা যাবে না। ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতায় সই করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী-সহ দেশের ৯৫ জন শীর্ষ মুফতি। ঢাকার বসুন্ধরায় ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে দেশের শীর্ষ মুফতিদের উপস্থিতিতে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই সইসাবুদের বিষয়টি সম্পন্ন হয়েছে।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি উদ্যোগে ভাস্কর্য নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ভাস্কর্যের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন কথা হচ্ছে। ফলে জাতীয়ভাবে এ নিয়ে প্রশ্নও উঠছে। ভাস্কর্য ও মূর্তির বিধান নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভ্রান্তি। সেই তাগিদ থেকে শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম ও মুফতিদের পক্ষ থেকে ভাস্কর্য ও মূর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সম্মিলিত বিবৃতি প্রস্তুত করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, কোনও মুসলিম দেশের শাসকদের শরিয়ত বিরোধী কাজ মুসলমানদের জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। সবমিলিয়ে, ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে টানাপোড়েন চরম আকার নিচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.