ফাইল ফটো
সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়ে শয়ে শয়ে ঘর ছেড়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন৷ কিন্তু এখন সেই সিদ্ধান্তের জন্য আক্ষেপের শেষ নেই বাংলাদেশ প্রশাসনের৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলছেন, ‘বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা যত দ্রুত ফিরে যাবেন, ততই দেশের জন্য মঙ্গল৷ রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে৷ আমি বিশ্বাস করি, শিগগিরই রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যাবেন৷’ বুধবার ঢাকার এক অভিজাত হোটেলে ‘ঢাকা মিটিং অফ দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’ শীর্ষক সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে একথা বলেন তিনি৷
এই সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছেছেন রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি মুন। একইদিনে ঢাকায় পৌঁছান মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলদা হেইনিও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের সামনেই বলেন, ‘আপনারা সকলে অবগত যে আমরা কক্সবাজার জেলায় মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। কক্সবাজারের যেসব এলাকায় রোহিঙ্গারা অবস্থান করছে, সেগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাদের উপস্থিতি এসব এলাকাকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। এসব বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেখভাল করার পাশাপাশি অতি দ্রুততার সঙ্গে তাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠাতে হবে।’
এমনিতেই মায়ানমারে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের জেরে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা বিপন্ন হয়ে দেশ ছাড়ছেন৷ সীমান্ত পেরিয়ে সোজা বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল কক্সবাজারে আশ্রয় নিচ্ছে৷ এই সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে৷ আশ্রয় শিবির তৈরি করেও সামলানো যাচ্ছে না৷ তার উপর ভিনদেশে আশ্রয় নিয়ে জীবনধারণের জন্য একের পর এক অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে৷ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এবার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ প্রশাসনের৷ প্রায়শয়ই শোনা বাংলাদেশের কক্সবাজার, টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলির পরিস্থিতিও বিশেষ ভাল নয়৷
রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে এবার আন্তর্জাতিক মহলের সাহায্য চাইছে হাসিনা প্রশাসন৷ এনিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে রাষ্ট্রসংঘও৷ তবে এর আগে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর গলায় কখনও এতটা উদ্বেগের কথা শোনা যায়নি৷ এবার তাঁর এই মন্তব্যেই স্পষ্ট হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের সামলাতে কতটা হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ প্রশাসন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.