সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাঙালি একেই খাদ্যরসিক। তার উপর আবার উৎসব হলে তো কথাই নেই। এই কটাদিন আর কোনও ডায়েট নয়। পরিবর্তে পেটপুরে খাওয়াদাওয়াকেই মূলমন্ত্র করে ফেলেন বাঙালিরা। এই উৎসবের মরসুমে ভারতের খাদ্যরসিকদের জন্য প্রচুর পরিমাণ ইলিশ পাঠানোর ছাড়পত্র দিল বাংলাদেশ সরকার। ঢাকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দুর্গাপুজোয় প্রতিবেশী রাষ্ট্রে ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ তথ্য আধিকারিক আবদুল লতিফ বক্সি বলেন, “ইলিশ বাঙালির খুবই প্রিয়। তবে চাহিদার তুলনায় জোগান অনেক কম। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা কলকাতায় ইলিশ নিয়ে যাবেন। পরে সেখানকার বাজারে তা বিক্রি করবেন। মূলত: কলকাতার বাজারেই এই ইলিশ বিক্রি হবে। এটা শুধুমাত্র একবারের জন্যই। এসব ইলিশ ভারতের সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক কোনও হস্তান্তর নয়। মূলত ভারতের একটি ব্যবসায়ী সমিতি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে এসব ইলিশ নিয়ে যাবে। শুধুমাত্র পুজো উপলক্ষে এই অনুমতি দিয়েছে সরকার।”
আজ থেকে প্রায় বছর চারেক আগে ঢাকায় গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। রাজ্যে ইলিশ না পাওয়ার অনুযোগ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় মমতা জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশ খুবই কম জোগান যায়। জবাবে হাসিনা বলেছিলেন, তিস্তার জল এলে ইলিশও যাবে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ঢাকা সফরে তিস্তার জলবণ্টন চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে চুক্তির বিরোধিতা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আপত্তিতেই বানচাল হয়ে যায় তিস্তা চুক্তি। এরপর প্রতিটি উচ্চপর্যায়ের সফরে তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয় ঠিকই। তবে এখনও পর্যন্ত তিস্তা চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
তবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন যাই হোক না কেন, উৎসবের সময় ৫০০ টন ইলিশ এদেশে আসার কথায় খুশি আপামর বাঙালি। পকেটের চিন্তা ভুলে উৎসবের মরসুমে বাজারে গিয়ে ইলিশ ব্যাগবন্দি করা যাবে ভেবেই মুখের হাসি চওড়া হয়েছে তাঁদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.