সুকুমার সরকার, ঢাকা: পূর্বাভাস ছিল। নেওয়া হয়েছিল আগাম ব্যবস্থাও। তাও রোখা গেল না ক্ষয়ক্ষতি। বাংলার পর বাংলাদেশে তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে প্রবল শক্তিশালী ঘুর্ণিঝড় বুলবুল। শনিবার ভোররাতে থেকে চলছে ধ্বংসলীলা। ইতিমধ্যেই বহু জায়গায় ভেঙে গিয়েছে কাঁচাবাড়ি এবং গাছ। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই।
ভোররাতে খুলনা ছুঁয়ে সাতক্ষীরায় আছড়ে পড়ে বুলবুল। প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, রবিবার সকালে নটা নাগাদ বুলবুল খুলনা এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে সরবে। তারপরই ক্রমশ শক্তি হারাবে দাপুটে ঘূর্ণিঝড়। এছাড়াও উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালি, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং আশেপাশের নানা দ্বীপ এবং চরেও প্রভাব পড়েছে ঘূর্ণিঝড়ের। প্রায় ৮০-১০০ কিলোমিটাক বেগে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসও শুরু হয়েছে। বুলবুলের জেরে মোংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আপাতত উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সমুদ্রের আশেপাশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকেই। তবে বুলবুল মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। ২৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও সব স্কুল-কলেজের ভবন খুলে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বর্তমানে ৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা, ৩১০ মেট্রিক টন চাল ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের বন্দোবস্ত করা রয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। জেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শনিবার বিকেল চারটে পর্যন্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। যেকোনও পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
অক্টোবর মাসের শেষের দিকে ভিয়েতনামের উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মাটমো’। তারপর যথারীতি শক্তি খোয়াতে শুরু করে সাইক্লোনটি। তবে ঘটনাচক্রে নয়া মোড় দিয়ে শক্তি বাড়িয়ে ‘বুলবুল’ নামে ফের অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় মাটমো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.