সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সফর ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে বাংলাদেশ। ওই সময় সংঘর্ষে প্রাণ হারান অন্তত ১৮ জন। তারপর থেকেই অভিযুক্তদের ধরপাকড় শুরু হয়। এহেন পরিস্থিতিতে তদন্তে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মোদি বিরোধিতার অছিলায় শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করাই লক্ষ্য ছিল হেফাজতে ইসলামের। এই ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেছে খোদ ইসলামিক সংগঠনটির প্রধান মামুনুল হক। এবার তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মিলল ৬ কোটি টাকা।
বিক্ষোভের ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। মোদি বিরোধিতার এই ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেছে খোদ ইসলামিক সংগঠনটির প্রধান মামুনুল হক। হেফাজত নেতাদের জেরা করে অনেক ‘গুরুত্বপূর্ণ’তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পাকিস্তানের ‘তেহেরিক-ই-লাবাইক’ নামের জেহাদি সংগঠনের আদলে তারা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে গঠন করে পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের মতো এ দেশকে গড়ে তুলতে চায়। এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে জামাত শিবিরের মদত রয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানিয়েছেন, মামুনুলের ব্যাংক একাউন্টে ৬ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। হাফিজ আক্তার বলেন, “হেফাজতে ইসলামের অর্থের যোগানদাতা হিসেবে ৩১৩ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, মামুনুল হককে ১৮ এপ্রিল ঢাকার মহম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ১৮টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মামুনুলের লুকানো ফোনটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। মহম্মদপুরের মাদ্রাসার একটি কক্ষ থেকে সেটি উদ্ধারের পর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তার মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট লিস্ট থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সূত্র থেকে তার কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা আসার তথ্য মিলেছে। বাবরি মসজিদ, কওমি মাদরাসার ছাত্রদের শিক্ষা ও হেফাজতে ইসলামের নাম করে মামুনুল মধ্যপ্রাচ্য থেকে কোটি কোটি টাকা এনেছে। সেসব টাকা বিভিন্ন নাশকতামূলক কাজে ব্যয় করা হচ্ছে। ঢাকায় ‘বাবরি মসজিদ’ নির্মাণ করেছে মামুনুল। এই মসজিদের নামে কাতার, দুবাই ও পাকিস্তান থেকে টাকা আনার প্রমাণও মিলেছে। ঢাকার মহম্মদপুর থানায় হামলা ও চুরির মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত নাশকতার দুই মামলায় মামুনুলের আরো সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। মামুনুলের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও জামাত কানেকশন পাওয়া গেছে। মামুনুল ভারতবিরোধী মতাদর্শীর লোক ও সরকারবিরোধী দলের লোকজনকে একসঙ্গে করে নাশকতার পরিকল্পনা করে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান বানচাল করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। এ জন্য ভারতে মুসলমানদের নির্যাতনে মোদি জড়িত বলে ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে আসে। এই ইস্যুতে সাড়াদেশে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ‘বড় মুভমেন্ট’ করার পরিকল্পনা করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.