ছবি প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘নেপাল আর গোপাল দুই ভাই। জমি নিয়ে দু’ জনের বিবাদ গড়ায় আদালতে। গোপালকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আবদুলের কাছে জমি বিক্রি করে দেয় নেপাল। ইদের সময় নেপালের জমিতে গরু জবাই করে আবদুল। তা দেখে কাউকে কিছু না জানিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে সপরিবারে চলে যায় ব্যথিত নেপাল।’ বাংলাদেশের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এই গল্পের উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
গত রবিবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় এহেন প্রশ্নের জেরে তৈরি হয়েছে তুমুল বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছে, এই প্রশ্নে সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এখন ওই প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেটরকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। দ্রুত তাঁদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রোফেসর তপনকান্তি সরকার জানিয়েছেন, কীভাবে এমন সাম্প্রদায়িক বিষয় প্রশ্নপত্রে রাখা হয় তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত বলেছেন, “এই সমস্ত ঘটনা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বাংলাদেশ ক্রমে মুসলিম দেশ হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।”
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে খবর, সাম্প্রদায়িক ও বিদ্বেষপূর্ণ কোনও বক্তব্য যেন প্রশ্নপত্রে না থাকে, সে জন্য প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সময়ই লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রশ্নপত্র দেখার যেহেতু কোনও সুযোগ থাকে না, তাই পরীক্ষা শুরুর আগে বিষয়টি বোঝা যায়নি। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিষয়টিকে অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেছেন, এই কাজ যারা করেছে, তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষার বাংলা প্রশ্নপত্র নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেখানে একজন কথাসাহিত্যিককে নিয়ে এমনভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, যাতে তাঁকে হেয় করা হয়েছে, যা মূলত বিদ্বেষপূর্ণ। দত রবিবার ওই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সবমিলিয়ে প্রশ্নপত্র বিভ্রাটে রীতিমতো উত্তাল বাংলাদেশ। বলে রাখা ভাল, বাংলাদেশে ক্রমে শিকড় মজবুত করছে মৌলবাদীরা। প্রতিনিয়ত আক্রমণ নেমে আসছে সংখ্যালঘুদের উপর। শিক্ষাক্ষেত্রেও যে এর প্রভাব পড়ছে তা স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.