সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভাসানচর থেকে নদীপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্বর্ণদ্বীপে আটকে পড়ে রোহিঙ্গা (Rohingya) শরণার্থীদের একটি দল। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের সন্ধান পায় পুলিশ ও প্রশাসন। প্রায় তিনদিন অভুক্ত থাকার পর বুধবার তাদের উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড বলে খবর।
বুধবার আটকে পড়া শরণার্থীদের আবার ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে নোয়াখালির পুলিশ সুপার মহম্মদ শহীদুল ইসলাম জানান। উদ্ধার রোহিঙ্গাদের মধ্যে ২৫ শিশু, ১২ জন মহিলা ও ১০ জন পুরুষ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবার ১৫ শিশু-সহ ৪৫ রোহিঙ্গা স্বর্ণদ্বীপ এলাকায় রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যায়। দু’দিন আগে তারা ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসেছিল। নদীপথে নৌকাযোগে দালালের মাধ্যমে পালানোর সময় নৌকার মাঝি রোহিঙ্গাদের কৌশলে স্বর্ণদ্বীপে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর প্রায় তিনদিন ধরে রোহিঙ্গারা না খেয়ে স্বর্ণদ্বীপে থাকতে বাধ্য হয়।
ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গাদের পলয়নের ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও সমুদ্রের মাঝে ওই বিচ্ছিন্ন দ্বীপ থেকে পালানোর চেষ্টা করেছে শরণার্থীরা। গত জুন মাসে বঙ্গোপসাগরেব বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘Human Rights Watch’ (HRW)। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে বর্ষাকালে কিছুতেই ভাসানচরে থাকতে চাইছেন না শরণার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ে দ্বীপটির পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। প্রবল বন্যায় ভেসে যেতে পারে ঘরবাড়ি। এছাড়া, প্রয়োজনীয়ও চিকিৎসা ব্যবস্থাও নেই। সেক্ষত্রে এই জায়গায় বাস করা মানে বিপদ ডেকে আনা।
এদিকে, প্রশাসন জানিয়েছে, দ্বীপটিতে শরণার্থীদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এপর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে সমুদ্রের মাঝে বিচ্ছিন্ন দ্বীপটিতে পাঠানো হয়েছে। মোট ১ লক্ষ শরণার্থীকে ভাসানচরে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে ঢাকার। তবে ঝঞ্ঝাপ্রবণ দ্বীপে শরণার্থীদের পাঠানো নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.