সুকুমার সরকার, ঢাকা: আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখ পুড়ল বাংলাদেশের (Bangladesh)। ভাসানচরে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি দলের সফর চলাকালীন তুমুল বিক্ষোভ দেখান কয়েক হাজার রোহিঙ্গা (Rohingya) শরণার্থী। তাঁদের দাবি, সমুদ্রের মাঝে এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে থাকতে চান না তাঁরা।
সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, সোমবার ভাসানচর পরিদর্শনে আসেন রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ‘ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস’-এর আধিকারিকরা। সমুদ্রের মাঝে বিচ্ছিন্ন দ্বীপটিতে হেলিকপ্টারে পদার্পণ করেন তাঁরা। দ্বীপটি রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সুরক্ষিত কি না? শরণার্থীদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো আছে কি? সেসব বিষয় খতিয়ে দেখতেই এই সফর। স্থানীয় পুলিশ আধিকারিক আলমগীর হোসেন জানান, রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা দ্বীপে নামতেই বিক্ষোভ শুরু করেন অন্তত ৪ হাজার শরণার্থী। পুলিশের উপরও হামলা হয়। কয়েকটি গুদামের কাচ ভেঙে দেয় বিক্ষোভকারীরা। শরণার্থীদের দাবি, তাঁরা এই দ্বীপে থাকতে চান না। এখান থেকে তাঁদের অন্যত্র নিয়ে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক চাপ উড়িয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে পাঠানোর কাজ দ্রুত গতিতে চালাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসন জানিয়েছে, দ্বীপটিতে শরণার্থীদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এপর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে সমুদ্রের মাঝে বিচ্ছিন্ন দ্বীপটিতে পাঠানো হয়েছে। মোট ১ লক্ষ শরণার্থীকে ভাসানচরে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে ঢাকার। তবে ঝঞ্ঝাপ্রবণ দ্বীপে শরণার্থীদের পাঠানো নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ। কিন্তু হাসিনা প্রশাসনের কথায়, নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা খরচ করে এক লক্ষ রোহিঙ্গার জন্য ভাসানচরে উন্নতমানের আবাসস্থল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে প্রত্যেক পরিবারের জন্য আলাদা ঘর, আধুনিক স্যানিটারি পদ্ধতি, বিশুদ্ধ খাবার জল, স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিং এবং বাচ্চাদের শিক্ষাদানের জন্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, মিডিয়ার কল্যাণে এর সবকিছু সবাই দেখেছে। ভাসানচরে ক্যাম্পের ভিতরে কক্সবাজারের মতো নিরাপত্তা সমস্যা যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য শতভাগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।তাই শরণার্থীদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.