সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে রোহিঙ্গারা। কিন্তু ভিন দেশে এলেও তাদের দস্যুপনায় অতিষ্ট খোদ আশ্রয়দাতা বাংলাদেশিরাই। নারী পাচার, মাদক কারবার, খুনখারাপি-সহ সব ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত রোহিঙ্গারা। শান্তি বজায় রাখায় জন্য শরণার্থী শিবিরে পুলিশ ক্যাম্প পর্যন্ত বসানো হয়েছে। তাতেও তাদের বাগে আনা যাচ্ছে না। এমনিতেই রোহিঙ্গারা জঙ্গিপনার জন্য কুখ্যাতি কুড়িয়েছে। এবার তাদের জ্বালায় অস্থির স্থানীয়রা।
বুধবার রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই দল রোহিঙ্গার মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আরসা গ্রুপ ও মুন্না গ্রুপের মধ্যে রাতভর দফায় দফায় গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। লাঠি ও ছুরিকাঘাতে দুই গ্রুপের মাঝে কমপক্ষে ১০ জন জখম হয়েছে। বুধবার রাতে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে দুই গ্রুপের মাঝে গুলি চলে। কুতুপালং ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ জালাল আহমদ জানান, ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরসা গ্রুপের নেতা মৌলভী আবু আনাস ও রফিকের নেত্বতে মুন্না গ্রুপের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত ২ টা পর্যন্ত দফায় দফায় গুলিবর্ষণ ও হামলা চলে। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় কুতুপালং ই-ব্লকের ১০/১৫ টি ঘরে ভাঙচুর করা হয়। কুতুপালং ২ নম্বর ক্যাম্পের হেড মাঝি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, দুটি গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ছুরি ও লাঠির ঘায়ে কমপক্ষে ১০ জন জখম হয়েছে। জখমদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় দুই জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ও অন্যদের কুতুপালং এনজিওদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত দফায় দফায় গুলি বর্ষণের ঘটনার সময় রোহিঙ্গারা দিক-বেদিক ছোটাছুটি করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। এর পর রাত সাড়ে ১২ টায় কুতুপালং ক্যাম্পের খেলার মাঠ এলাকায় দু’গ্রুপের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী গুলিযুদ্ধ চলে। কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ খলিলুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পৌছালে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
এর আগে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা এক অটোচালককে দিনদুপুরে অপহরণ করে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করে। এসময় অটোচালক সমিতির অফিসে অবস্থানকারী নেতা শাহজানকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে স্থানীয় লোকজনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। রোহিঙ্গারা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠায় স্থানীয়রা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে অটোচালক সমিতির সভাপতি মুক্তার চৌধুরি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.