সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। বিগত দিনে একের পর এক রোহিঙ্গা নেতা খুনের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে অভিযান শুরু করেছিল পুলিশ। কিন্তু তাতেও বিশেষ ফল মিলছে না। এবার গুলি করে আরও এক রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করল জঙ্গিরা।
বুধবার কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মহম্মদ সলিম (২৮) নামের এক মাঝিকে (নেতা) গুলি করে জঙ্গিরা। হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ৫ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের সি-২ ব্লকে এ কাণ্ড ঘটে। এর আগে মঙ্গলবার উখিয়ার ইরানি পাহাড়ে দুই পক্ষের গুলিযুদ্ধে দুই শিশু জখম হয়। গুলিবিদ্ধ মহম্মদ সলিম উখিয়ার কুতুপালং ৫ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের সি-২ ব্লকের বাসিন্দা রফিকউদ্দিনের ছেলে। তিনি ক্যাম্পটির সি-ব্লকের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সহকারী কমিউনিটি নেতা হিসেবে দায়িত্বরত।
উল্লেখ্য, মানবতার খাতিরে ২০১৭ সালের আগস্টে আশ্রয়দানের জন্য রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। মায়ানমারের কয়েকটি সেনা চৌকিতে কট্টরপন্থী রোহিঙ্গারা হামলা চালায়। এরপর সেদেশের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা নিধনে নামে। জীবন বাঁচাতে শুধু রোহিঙ্গা শরণার্থীরাই নয়- বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় বেশ কিছু অপরাধী ও জঙ্গি সংগঠন। তারা শুধু তাদের শিবিরের মধ্যেই নয়, কক্সবাজার জেলা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা ১৩ লক্ষ। আধিপত্য নিয়ে নিত্যদিন গুলিযুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে।
এহেন পরিস্থিতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের (Bangladesh) জন্য বড় ধরনের বোঝা বলে উল্লেখ করে তাদের ভাষানচরে স্থানান্তর করতে রাষ্ট্রসংঘের সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইসকে শেখ হাসিনা গত সোমবার এই অনুরোধ জানান। শেখ হাসিনা বলেছেন, যেহেতু এখনও রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কোনও নিশ্চয়তা নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আরও উন্নত আবাসনের জন্য ভাসানচরে স্থানান্তর করা উচিত। অবশ্য কিছু রোহিঙ্গার দস্যুপনার কারণে তাদের এখন বিচ্ছিন্ন করার কথা ভাবা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের বোঝা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.