সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিশ্ব মানচিত্রে ব্রাত্য রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। মায়ানমার থেকে আসা প্রায় ১১ লক্ষ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু শরণার্থী শিবিরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ এবার জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়ে বুধবার ফের জঙ্গিদের হাতে ফের খুন হয়েছেন এক রোহিঙ্গা নেতা।
পুলিশ সূত্রে খবর, উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্পে ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ বা আরসা জঙ্গিদের গুলিতে মহম্মদ জসিম (২৫) নামের এক রোহিঙ্গা নেতা (হেড মাঝি) নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোরে ক্যাম্প-১০ এর সিআইসি অফিসের সামনে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত রোহিঙ্গা নেতা ওই ক্যাম্পের আবদুল গফুরের ছেলে। রোহিঙ্গা নেতার মৃত্যুর তথ্য জানিয়ে ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার মহম্মদ ফারুক আহমেদ বলেন, “ক্যাম্পে ভোররাতে কয়েক রাউন্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে সেখানে জসিম নামে একজনের গুলিবিদ্ধ দেহ পাওয়া যায়। সে ক্যাম্প ভিত্তিক সন্ত্রাসী বিরোধীদের পক্ষে স্বোচ্ছাসেবী ছিল।”
পুলিশ সুপার আরও জানান, অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ক্যাম্পের বাসিন্দা মহম্মদ ইসলাম বলেন, “মুখোশধারী দল ক্যাম্পে ঢুকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে জসিমকে বুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। অস্ত্রধারীরা ‘আরসা’ বাহিনীর সদস্য। জসিম সব সময় আরসার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিপক্ষে ছিল। এর জন্যই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।”
সূত্রের খবর, রোহিঙ্গা (Rohingya) শরণার্থী শিবিরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠি আরসা। কক্সবাজারে টেকনাফ এবং উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিচালনায় সহায়তার জন্য প্রতিটি শিবিরে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা নির্বাচন করা হয়। যাদের মাঝি বলা হয়। মূলত, এদেরই নিশানা করে জঙ্গিরা। কয়েকদিন আগেই এক রোহিঙ্গাকে ইসলামিক স্টেটের কায়দায় গলা কেটে খুন করে জঙ্গিরা। রোহিঙ্গা নেতাদের হিসাবে, গত এক বছরে কমপক্ষে ১২টি হত্যাকাণ্ড। পুলিশি অভিযান চালিয়েও তেমন কোনও সুরাহা মিলছে না। এ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন প্রশাসন। প্রায় প্রতিদিনই খুনোখুনি, লুটপাটের ঘটনা ঘটে চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.