ছবি: প্রতীকী
সুকুমার সরকার, ঢাকা: এবার রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া বাংলাদেশে। মৃতের দেহে প্রাণ ফিরে আসবে এই আশায় সাতদিন দেহ আগলে রাখল পরিবার। দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে দ্বারস্থ হন প্রতিবেশিরা। তারপরই প্রকাশ্যে আসে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
ঢাকার অদূরে নরসিংদীর মনোহরদী পৌরসভায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, একটি বাড়ি থেকে কয়েক দিন ধরেই দুর্গন্ধ ভেসে আসছিল। দুর্গন্ধের উৎস খুঁজে বের করতে পারছিলেন না কেউই।ওই বাড়ির সদস্যরাও দরজা-জানালা বন্ধ রেখে রহস্যজনক আচরণ করছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা জনপ্রতিনিধি ও পুলিশে খবর দেন। এরপর ওই বাড়ির গেটের তালা ও ঘরের দরজা ভেঙে এক মহিলার পচে-গলে বিকৃত হয়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়। রবিবার রাত আড়াইটা নাগাদ লাশটি উদ্ধার করা হয়।
মৃত মহিলার নাম শামীমা সুলতানা ওরফে নাজমা (৫৫)। তিনি মনোহরদী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোক্তারউদ্দিন তালুকদারের (৬৮) স্ত্রী। ওই মহিলার দেহ আগলে বসেছিলেন তাঁর স্বামী, চার মেয়ে ও তিন নাতি। তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ওই পরিবারের নাকি বিশ্বাস, মৃত মহিলা দেহে ফের প্রাণ সঞ্চার হবে।
মনোহরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ বলেন, গত সপ্তাহে সোমবার ভোরে মারা যান শামীমা সুলতানা। এরপর থেকে লাশটি একটি তোশকে পেঁচিয়ে খাটের নিচে রেখে ঘরটিতে বাস করছিলেন পরিবারের সদস্যরা। এরমধ্যে লাশ পচে-গলে বিকৃত হয়ে গিয়েছে ও পোকায় ধরেছে। এতেও ভ্রূক্ষেপ ছিল না তাঁদের। লাশে আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে এতদিন ধরে লাশ দেহ রেখে দেওয়ার ঘটনায় এটি স্বাভাবিক মৃত্যু কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের জুনে প্রকাশ্যে আসে রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ড। পড়শিদের অভিযোগে একটি বাড়িতে গিয়ে পুলিশ আবিষ্কার করে যে দিদির কঙ্কালের সঙ্গে ভাবলেশহীনভাবে বাস করছিলেন পার্থ দে নামের এক ব্যক্তি। ঘটনায় শিহরিত হয়েছিলেন শহরবাসী। পার্থকে সারিয়ে তোলারও চেষ্টা করা হয়েছিল। মাদার হাউসে কিছুদিন কাটিয়েছিলেনও তিনি। তারপর অন্য একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন। সেখানেই অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয় তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.