সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) দাপটে জর্জরিত বাংলাদেশ। গত পাঁচ মাস ধরে দেশের মানুষ স্বস্তিতে নেই। তার মাঝে নতুন বিপদ নিয়ে এল বন্যা। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর জল কমতে শুরু করলেও বিপদ বাড়ছে রাজধানী ঢাকার। দেশের কিছু মানুষ মাসব্যাপী টানা বন্যায় ভুগেছে।
এবার ঢাকার আশপাশের নদ-নদীর জল বেড়ে চলেছে। ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (Dhaka City Corporation) সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল ঢাকা, গাজিপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। ঢাকা ঘিরে থাকা তুরাগ ও বালু নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদ-নদীর জল খালের মাধ্যমে ঢুকে রাজধানী-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকাকে প্লাবিত করছে। পুরানো ঢাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গার জল এখনো বিপদসীমার নিচে থাকলেও প্রতিদিন জলের উচ্চতা বাড়ছে। বিপদসীমার উপরে রয়েছে ঢাকার পার্শ্ববর্তী ধলেশ্বরীর জল।
এভাবে প্রতিটি নদীর জলস্তর বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে রাজধানীর চারপাশের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা। ঢাকার দক্ষিণখান, সাঁতারকুল, বাড্ডা, বেরাইদ, ডুমনি, রামপুরা, গোড়ান, বাসাবো, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী ও ডিএনডি বাঁধ এলাকার নিম্নাঞ্চলে জল ঢুকে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চারটি ওয়ার্ড এলাকা। এছাড়া সংযোগ খাল দিয়ে বন্যার জল ঢুকে পড়ছে নগরীর ভেতরেও। তলিয়ে গেছে সাভার, গাজিপুরের টঙ্গী, কাপাসিয়া, কালীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ-সহ রাজধানী ও আশপাশের জেলাগুলোর অনেক এলাকা।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বালু নদীর জল ডেমরা পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার, তুরাগ নদের জল মিরপুর পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরীর জল এলাসিন পয়েন্টে ৭৮ সেন্টিমিটার ও জাগির পয়েন্টে ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একদিনের ব্যবধানে বুড়িগঙ্গার জল ঢাকায় ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ঢাকার আশপাশের নদ-নদীর জল আজও একই অবস্থায় থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস। প্রতি বর্ষায় এমন বন্যা পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত বাংলাদেশের মানুষ। তবে এ বছর করোনার দাপটের পাশাপাশি এল এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়। বিপদের জোড়া ফলায় কার্যত দিশেহারা সাধারণ মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.