সুকুমার সরকার, ঢাকা: পুজোর আগে শহরে উপহার ঢোকার ক্ষেত্রে জটিলতা। রবিবারই প্রথম ধাপে বেনাপোল-হরিদাসপুর স্থলবন্দর দিয়ে ২৪ মেট্রিক টন ইলিশ ঢোকার কথা ছিল বাংলায়। কিন্তু আইনি জটিলতায় সীমান্তে আটকে গেল ইলিশ ভরতি লরি। এক্কেবারে বিনা শুল্কে প্রতি কেজি ছয় মার্কিন ডলার মূল্যে ওই মাছগুলিকে রপ্তানি করা হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের টাকার হিসাবে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ওই মাছ বাংলায় বিকোবে ৪৩০ টাকা করে। বাংলার বাজারে রূপোলি শস্যের উপস্থিতি শুনে মুখের হাসি চওড়া হচ্ছে ভোজনরসিকদের।
প্রায় সাত বছর পর এই প্রথমবার বিনা শুল্কে বাংলায় আসছে পদ্মার ইলিশ। রূপোলি শস্যের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার গাজিপুরের অ্যাকুয়াটিক রিসর্ট লিমিটেড। আমদানিকারক কলকাতার নাজ ইমপেক্স প্রাইভেট লিমিটেড। বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো সুপার আজিজুল রহমান ইলিশ মাছ রপ্তানি প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দুর্গাপুজো উপলক্ষে ভারতে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির নির্দেশই রয়েছে। তাই রবিবার দুপুরে ২৪ মেট্রিক টন ইলিশের প্রথম চালান ভারতে রপ্তানি হয়েছে।”
প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক বাড়াতে দুর্গাপুজো উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে ৫০০টন ইলিশ মাছ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ সরকার। যদিও ২০১২ সালের আগে পর্যন্ত ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হত। তবে দেশে ইলিশের উৎপাদন কমে যাওয়ায় ২০১২ সালের পরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় সরকার। বছর চারেক আগে ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ঢাকায় গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। রাজ্যে ইলিশ না পাওয়ার আরজি জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় মমতা জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশ খুবই কম রপ্তানি করা হয়। জবাবে হাসিনা বলেছিলেন, তিস্তার জল এলে ইলিশও যাবে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ঢাকা সফরে তিস্তার জলবণ্টন চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে চুক্তির বিরোধিতা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আপত্তিতেই বানচাল হয়ে যায় তিস্তা চুক্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.