সুকুমার সরকার, ঢাকা: একলাফে জ্বালানির লাগামছাড়া দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ (Bangladesh) জুড়ে শুরু জনবিক্ষোভ। ঢাকা ও অন্যান্য শহরে রাতভর চল বিক্ষোভ। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, পেট্রল পাম্পগুলি ঘিরে রেখেছেন প্রতিবাদীরা (Protest)। তাঁদের মধ্যে ছাত্র ও যুব সংগঠনের কয়েকজন সদস্যকেও দেখা গিয়েছে। সূত্রের দাবি, তারা সকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি। প্রতিবাদীদের একটাই দাবি, অবিলম্বে পেট্রল, ডিজেলের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করতে হবে।
শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে বাংলাদেশে জ্বালানির (Fuel) নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। ডিজেল এবং কেরোসিনের দাম একধাক্কায় লিটার প্রতি ৩৪ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির পর সেঞ্চুরি পার করেছে দুই জ্বালানির দামই। ডিজেল ও কেরোসিনের লিটার প্রতি দাম ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৪ টাকা দাঁড়িয়েছে। বেড়েছে পেট্রলের দামও। ৮৬ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩০ টাকা। সেঞ্চুরি পার করে অকটেনের দাম দাঁড়িয়েছে ১৩৫ টাকা। জনতার অভিযোগ, গত নভেম্বরে ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর বাস ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ, লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হয় ৩৫ শতাংশ যা তেলের দাম বাড়ানো হারের চেয়ে অনেক বেশি। এটাই রেকর্ড দামবৃদ্ধি।
এর প্রতিবাদে রবিবার রাতভর বিক্ষোভের সাক্ষী রইল রাজধানী ঢাকার ন্যাশনাল মিউজিয়াম চত্বর। সেখানকার জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দামবৃদ্ধি নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মিছিল বেরয় ঢাকার রাস্তায়। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্র ও যুব। প্রতিবাদ মিছিল থেকে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে শামিল পরিবহণ সংগঠনগুলিও। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দাবি, বাসভাড়াও বাড়াতে হবে। কিন্তু সেই ভাড়া কী হারে বাড়বে, তা নিয়ে চিন্তায় তাঁরা।
শনিবার হাসিনা সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, নতুন মূল্যবৃদ্ধির ভার বহন করা সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু বিশ্বে জ্বালানি বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার জন্য জ্বালানির দাম না বাড়িয়ে সরকারের কোনও উপায় ছিল না। দেশবাসীকে একটু ধৈর্য ধরার আবেদন জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশের এই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিকে অশনি সংকেত হিসেবে গণ্য করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের শুরুতে অস্বাভাবিক হারে দাম বেড়েছিল জ্বালানি। এরপরই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম লাগামছাড়াভাবে বেড়েছিল। বাংলাদেশেও কি সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে, উঠছে প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.