ছবি: প্রতীকী
সুকুমার সরকার, ঢাকা: নির্যাতিতা তরুণীকে বিয়ে করে স্ত্রীর সম্মান দিয়ে তবেই মিলল জামিন। রবিবার এমনই ঘটনার সাক্ষী বাংলাদেশের (Bangladesh) দক্ষিণ জনপদ জেলা ঝালকাঠি। আদালতের এজলাস কক্ষেই ধর্ষণ মামলার আসামির সঙ্গে নির্যাতিত তরুণীর বিয়ে হয়েছে। এদিন দুপুরে ঝালকাঠির অবকাশকালীন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১’এর বিচারক মহম্মদ শহিদুল্লার আদালতে এ ঘটনার সাক্ষী রইলেন আরও অনেকেই। বিয়ে পর্ব সম্পূর্ণ হওয়ার পর বিচারক আসামিকে জামিন দেন।
জানা গিয়েছে, ধর্ষণ (Rape) মামলার আসামি নঈম সরদারের বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায়। সে একজন ইলেকট্রিশিয়ান। আর বছর আঠেরোর নির্যাতিতা তরুণী ঝালকাঠি সদর উপজেলা বাসিন্দা। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি আইনজীবী আবদুল মান্নান জানান, এদিন ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিচারকের নির্দেশে দু’পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে দেন কাজি মৌলানা মহম্মদ সৈয়দ বশির। বিয়ে শেষে উপস্থিত সবাইকে নিজে মিষ্টিমুখ করান বিচারক মহম্মদ শহিদুল্লা। এরপরেই তিনি আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
২০১৯ সালের শুরুর দিকে মোবাইলের মাধ্যমে নঈম এবং নির্যাতিতা তরুণীর পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে নঈম ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। গত ৮ নভেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তরুণী ধর্ষণের মামলা করেন। বিচারক নির্যাতনের শিকার তরুণীর অভিযোগ ঝালকাঠি থানায় এজহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এরপর অভিযুক্ত নঈমকে বাবা আনোয়ার হোসেন ঝালকাঠি থানায় পুলিশের হাতে তুলে দেন। মামলার তদন্তকারী আধিকারিক আসামিকে গ্রেপ্তার করেন, আদালতে পাঠানো হয় তাকে। আদালত সেসময় নঈমের জামিনের আবেদন খারিজ করে জেল হেফাজতে পাঠায়।
এরপর রবিবার নঈমকে ফের আদালতে পেশ করা হয়। শুনানির সময় নঈম নিজেই ওই তরুণীকে বিয়ের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। এই প্রস্তাবে তরুণীর পরিবার রাজি হয়ে যায়। বিচারক ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরের বিনিময়ে বিয়ের নির্দেশ দেন। এজলাসেই বসে বিয়ের আসর। মৌলানার মধ্যস্থতায় বিয়ের পর আদালতে কাগজপত্র জমা দিলে ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় নঈমের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এই ঘটনা থেকে ভবিষ্যতে অনেক অপরাধীই শিক্ষা নেবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন বিচারক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.