সুকুমার সরকার, ঢাকা: তিনদিন ধরে বন্ধ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশের (Bangladesh) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে বিদ্যুতের তীব্র সংকট। লোডশেডিংয়ে হাসফাঁস বাগেরহাট, খুলনা, যশোর-সহ একাধিক জেলার মানুষজন। গত ১৪ তারিখ থেকে কয়লা (Coal) সংকটের জেরে বন্ধ রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ১৫ তারিখ রাত থেকে পুরোপুরি বন্ধ বিদ্যুৎ উৎপাদন। ভারতের (India) সাহায্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ চলছিল। এই প্রকল্পের কর্ণধার আনোয়ারুল আজিম বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যদিও তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে কয়লার কোনও সংকট নেই।
আনোয়ারুল আলম বলেন, ”কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৫ এপ্রিল রাত থেকে কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আশা করছি, সকল সমস্যা সমাধান করে আবারও দ্রুত উৎপাদনে যাবে কেন্দ্রটি। বর্তমানে কেন্দ্রে কোনও কয়লা সংকট নেই। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত কয়লা মজুত রয়েছে। কয়লা আমদানিও করা হয়েছে। যা এখনও মাঝপথে। শিগগিরই সমুদ্রপথে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে এসে পৌঁছনোর কথা।”
হঠাৎ করে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহে। ফলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে বাগেরহাট, খুলনা, যশোর-সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে। জানা যায়, ২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (BIFPCL) নামে একটি সংস্থা গঠিত হয়। এই সংস্থার অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নে ১০৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ৯ বছর বিশলা কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি।
২০২২ সালের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। একমাস পর ১৪ আগস্ট টারবাইনে স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়। পরে ১৭ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রিডে বাণিজ্যিকভাবে যুক্ত হয় কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ। পরে ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি। এর প্রায় একমাস পরে কয়লা প্রাপ্তি সাপেক্ষে ১৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টায় আবারও প্রথম ইউনিটের উৎপাদন শুরু হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.