Advertisement
Advertisement
Bangladesh

‘বিদেশের গণমাধ্যমে দেশের সঠিক ছবি তুলে ধরুন’, OCAB সম্মেলনে আবেদন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীর

‘মিট দ্য ওকাব’ অনুষ্ঠানে বিশ্বের গণমাধ্যমগুলির কাছে এই আহ্বান জানিয়েছেন ড. হাসান মাহমুদ।

Portray Bangladesh in positive light, urges Bangladesh information minister | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 12, 2022 1:50 pm
  • Updated:May 12, 2022 1:50 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিদেশি গণমাধ্যমে দেশকে সঠিকভাবে তুলে ধরুন। বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিদের সংগঠন ওভারসিজ করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (OCAB) সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ। বুধবার দুপুরে রাজধানী ঢাকায় (Dhaka) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য ওকাব’ অনুষ্ঠানে বিশ্ব গণমাধ্যমে দেশের প্রতিফলনের ক্ষেত্রে ওকাবের ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করে তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন। মন্ত্রীর বক্তব্য, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ থেকে দূরদর্শন ফ্রি ডিশের মাধ্যমের সমগ্র ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সম্প্রচার শুরু করেছে। ১৪ জানুয়ারি, ২০২০ থেকে প্রথমবারের মতো আকাশবাণীর মাধ্যমে সমগ্র ভারতে বাংলাদেশ বেতারের দৈনিক চার ঘণ্টা সম্প্রচার এবং বাংলাদেশ (Bangladesh) বেতারে আকাশবাণীর অনুরূপ সম্প্রচার শুরুকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে অভিহিত করেন তথ্যমন্ত্রী।

ওকাবের আহ্বায়ক বিবিসি বাংলার প্রতিনিধি কাদির কল্লোলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব জার্মান প্রেস এজেন্সির প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম মিঠুর পরিচালনায় এই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মন্ত্রী। সংবাদ প্রতিদিন (কলকাতা, এপি, ডি-ডব্লিউ, জিনহুয়ার প্রতিনিধি-সহ ওকাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো ভালভাবে করে যাওয়ার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। তা জানিয়ে ড. হাসান বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষা করা, গণমাধ্যমের অর্থ-বহ বিকাশ এবং সেইসঙ্গে ভুয়ো ও ভূঁইফোড় সাংবাদিক কিংবা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে যাতে বৃহত্তর সাংবাদিক সমাজের বদনাম না হয় এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা – এগুলোর জন্য আমি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে গত বছরের ১৫ মার্চ থেকে মন্ত্রণালয়ের নাম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় করা হয়, যা আমাদের কাজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’’

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনার পর দেশে চোখ রাঙাচ্ছে ‘টমেটো ফ্লু’, জেনে নিন ভয়ংকর রোগের উপসর্গ]

অনুষ্ঠানে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারর্স এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রসংঘ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাপ্রধান, নানা দেশের রাষ্ট্রপ্রধানবৃন্দ এবং বিশ্বের গণমাধ্যম গত এক দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রশংসা করেছে। অপরদিকে, বাংলাদেশের পক্ষপাতদুষ্ট সমালোচনাকারী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এমন একটি সংস্থা যারা প্যালেস্তাইনের শিশুদের ঢিল ছোঁড়ার জবাবে ইজরায়েলি সেনাদের ব্রাশফায়ারে শিশু হত্যার প্রতিবাদ করে না, বাংলাদেশে বিএনপি-জামাত একশো জনেরও বেশি মানুষকে পেট্রল বোমায় পুড়িয়ে হত্যা করলেও প্রতিবাদ করে না, আবার মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের জন্য বলে। এই কারণে তারা বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। আর যে আফগানিস্তানে সংবাদ উপস্থাপনের কারণে নারীদের হত্যা করা হয়, যে দেশে সাংবাদিকতার সুযোগই নেই, তাঁদের পেছনে বাংলাদেশের অবস্থান দেখিয়ে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারর্স নিজেরাই প্রমাণ করেছে যে, তাদের মুক্ত গণমাধ্যম সূচক ও প্রতিবেদন বিদ্বেষপ্রসূত। একইসাথে টিআইবি সব বিষয়ে বিবৃতি দিতে গিয়ে রাজনৈতিক দলের সাথে তাদের পার্থক্য হারিয়ে ফেলছে।’’

মন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘‘আমি মনে করি, বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম যেভাবে অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে, এটি অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ। যুক্তরাজ্যে কারো বিরুদ্ধে ভুল বা অসত্য রিপোর্ট হলে সেটির প্রেক্ষিতে মামলা হয়, সংবাদমাধ্যমকে জরিমানা গুণতে হয়। সেখানে একজন এমপির বিরুদ্ধে অসত্য সংবাদ পরিবেশনের কারণে বিবিসির পুরো একটি টিমকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। তিন মাস আগেও একটি ভুল সংবাদ পরিবেশনের ঘটনায় বিবিসির অনেককে পদত্যাগ করতে হয়েছে। সেখানে ২০১১ সালে ১৬৭ বছরের পুরনো পত্রিকা নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড একটি ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে তাদের উপর আদালতের জরিমানার পরিমাণ এত বেশি ছিল যে, তারা পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে কোম্পানিকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। এ ধরনের ঘটনা কন্টিনেন্টাল ইউরোপেও হয়, আমাদের দেশে কখনও এমন ঘটেনি।’’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সাম্প্রতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও অর্জনের কথা তুলে ধরতে গিয়ে মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ তার উদ্যোগে বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার সংক্রান্ত আইনের বাস্তবায়ন, কেবল নেটওয়ার্কে দেশি টিভি চ্যানেলগুলো সবার আগে এবং তাদের সম্প্রচারের তারিখ অনুযায়ী পরপর তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কয়েক দফা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ ডিশ টিভি উচ্ছেদ অভিযান করে বছরে দেশের ১ হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার ও লোকসান হওয়া রোধ, বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণে দেশি শিল্পী ও শিল্পের সুরক্ষায় বিদেশি শিল্পী ও বিদেশে চিত্রায়িত বিজ্ঞাপন প্রচারের উপর কর আরোপের কথা জানান।

[আরও পড়ুন: অভিষেককে দিল্লিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ কেন? কয়লা পাচার মামলায় সুপ্রিম ভর্ৎসনার মুখে ইডি]

একইসঙ্গে বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে ওটিটি (OTT) প্ল্যাটফর্ম ব্যবস্থাপনায় নীতি প্রণয়ন, গণমাধ্যমকর্মী আইন ও সম্প্রচার আইনের খসড়া প্রণয়ন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক পৃষ্ঠপোষকতায় সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে করোনায় গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য বিশ্বে নজিরবিহীন সহায়তা দান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচাতে প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ ও সংস্কারে ১ হাজার কোটি টাকার সহজ ঋণ তহবিল গঠন, চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান বৃদ্ধি এবং সাংবাদিকদের ডাটাবেস তৈরির জন্য প্রেস কাউন্সিলকে নির্দেশনা দানের বিষয়েও আলোকপাত করেন আওয়ামি লিগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে ড. হাসান বলেন, ‘‘ডিজিটাল প্লাটফর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলেধরার গুজবে দেশে বহু নিরীহ মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে, জীবিত ব্যক্তি মৃত বলে প্রচার হয়েছে, গুজব রটিয়ে সাম্প্রদায়িক শান্তি বিনষ্টের অপচেষ্টা হয়েছে। এই মাধ্যমে যাতে কারও চরিত্রহনন, গুজব রটানো, কিংবা রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির স্বাধীনতা বা নিরাপত্তাহানি না ঘটে সেজন্য আপামর মানুষের জন্য এই আইন, কোনওভাবেই শুধু সাংবাদিকদের জন্য নয়।’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement