সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গা (Rohingya) শরণার্থী শিবিরে প্রতি বছর জন্ম নিচ্ছে ৩৫ হাজার শিশু। ফলে জনবিস্ফোরণের আশঙ্কায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা। কয়েক লক্ষ শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় চাপ বাড়ছে অর্থনীতির উপর। এহেন অবস্থায় রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম নিয়ন্ত্রণ না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন অনেকে।
২০১৭ সালে মায়ানমারে সেনা অভিযানের জেরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা। মানবিকতার খাতিরে তাদের আশ্রয় দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবিরে প্রতিবছর ৩৫ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করছে। রোহিঙ্গাদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির চতুর্থ সভায় এই তথ্য দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ২০১৭ সালে সেনা অভিযানে সাত লক্ষ রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এরআগে কয়েকদফায় এসেছে চার লক্ষ রোহিঙ্গা। বর্তমানে বাংলাদেশে শরনার্থী শিবিরগুলেতে ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা বাস করছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি বিদেশি সাহায্য সংস্থাগুলো থেকে খাদ্য-সহ আনুষঙ্গিক সহায়তা দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল বলেন, “প্রকৃতপক্ষে আমরা দেখতে পাচ্ছি এখানে যেসব রোহিঙ্গা এসেছে, প্রতি বছর তাদের সংখ্যা ৩৫ হাজার করে বেড়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিচ্ছে। পাঁচ বছরে দেড় লক্ষ রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। এটাও আমাদের জন্য একটি আশঙ্কার জায়গা। এটি যাতে আমরা সামলাতে পারি, সেজন্য এসব ব্যবস্থার কথা আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। আমরা দেখেছি রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় জন্মহার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই জায়গায় আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগকে বলব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে বলব- তারা যাতে সবাইকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করে। সেজন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, জন্মনিয়ন্ত্রণকে তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে তরতরিয়ে বেড়েই চলেছে শিশুর সংখ্যা৷ উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলিতে আশ্রিতা রোহিঙ্গা মহিলাদের মধ্যে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে জন্মদান। যা চিন্তা বাড়িয়েছে বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের৷ আশঙ্কা, এখনই রোহিঙ্গাদের জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে দেশে। সমীক্ষা বলছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে প্রতিদিন গড়ে জন্ম নিচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ জন শিশু। বিপুল এই জনবিস্ফোরণের কারণে রোহিঙ্গাদের পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসিনা প্রশাসন। এবং ক্রমাগত অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা৷ যা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নিরাপত্তারক্ষীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.