সুকুমার সরকার, ঢাকা: কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আর কয়েক ঘণ্টা পরেই ‘অমর ২১ ফেব্রুয়ারি’। ইংরেজি সময়ের ঘড়ি ধরে রাত ঠিক ১২.০১ মিনিটে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বাংলা ভাষার শহিদদের শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। শ্রদ্ধা জানানো হবে ভাষা শহিদ সালাম-বরকত-রফিকের রক্তে ভেজা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে।
শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশ-সহ সারা বিশ্বে ভাষা শহিদদের স্মরণে যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হবে। এদিন রাত ১২টার আগেই কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে চলে আসবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরপর দু’জনে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তারপর রাত থেকেই নানা কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। কাল কলকাতাতেও কর্মসূচি রয়েছে ভাষা শহিদদের স্মরণ করে। কলকাতার বিড়লা তারামণ্ডলের উলটোদিকে ভাষা শহিদ স্মারকে শ্রদ্ধা জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস থেকে শুরু করে বনগাঁ সীমান্তেও অমর একুশে পালন করা হবে। সেই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন দুই বাংলার বিশিষ্টরা।
রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের মানুষ নিজ নিজ এলাকায় আলোচনা সভা-সহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে একুশের মহান শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শাসক দল আওয়ামি লিগের তরফে সকালে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সমস্ত শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইতিমধ্যেই অমর একুশে পালনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আলপনা, ফুলের সাজে সেজে উঠেছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। শহিদ মিনারকে ঘিরে থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। শহিদ মিনার চত্বরে তল্লাশি ছাড়া কোন ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। যে কোন জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার- মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদরা জাতিকে সেই মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গিয়েছেন।
১৯৫২ সালের এ দিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ও যুবসমাজ-সহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শঙ্কিত করে তোলে। পরিস্থিতি সামলাতে সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন। তাঁদের এই আত্মদান নিয়ে গান বাঁধেন শিল্পীরা। উল্লেখিত বরকতের বাড়ি মুর্শিদাবাদে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.