সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে স্বামী বা মা-বাবার সম্পত্তিতে হিন্দু ও বৌদ্ধ নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব ও ধর্ম সচিবকে এই নোটিস পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তনয় কুমার সাহা এই নোটিস পাঠান। তিনি বলেন, “সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদে নারীদের সমান অধিকারের কথা বলা আছে। এছাড়া বাংলাদেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক কনভেনশনের সদস্য। ওই সব কনভেনশনের আর্টিকেলগুলোতে এটি বাস্তবায়নের কথা আছে। তাই এ বিষয়ে আইন করতে নোটিস দিয়েছি। নোটিশের জবাব না পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” এর আগে ঢাকা হাই কোর্ট এক রায়ে জানায়, এখন থেকে স্বামীর সকল সম্পত্তির ভাগ পাবেন বাংলাদেশের হিন্দু বিধবারা। এর ফলে ৮৩ বছর পর স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকার ফিরে পেলেন বাংলাদেশের হিন্দু বিধবারা। এই রায় অনুযায়ী এখন থেকে স্বামীর কৃষি জমিরও অংশীদার হবেন হিন্দু বিধবারা।
এতদিন বাংলাদেশে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী, যাঁরা মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধে শাস্ত্রমতে পিণ্ডদান করতে পারেন তাঁরাই একমাত্র সম্পত্তির অধিকার পেতেন। হিন্দু আইনের সবচেয়ে কঠোর অংশ হল, মেয়ে সন্তানদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টনের বিষয়টি। ১৯৩৭ সালে তৈরি এই আইন অনুযায়ী বাবার সম্পদের উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হত মেয়েদের। মৃত ব্যক্তির ছেলে থাকলে সম্পত্তির ভাগ পেতেন না তাঁর মেয়েরা। আর ছেলে না থাকলে অবিবাহিত ও পুত্রসন্তানের জন্ম দেওয়া মেয়েরাই একমাত্র সম্পত্তির অধিকার পেতেন। বঞ্চিত হতেন বন্ধ্যা, বিবাহিতা বা বিধবা ও কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়া মেয়েরা। অর্থাৎ মেয়েদের অধিকার নির্ভর করত ছেলে থাকা বা না থাকার ওপর। তবে, ২০১২ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের আইন কমিশন হিন্দু নারীদের সম্পত্তিতে সমান ভাগ দেওয়ার জন্য একটি নতুন আইন প্রণয়নের সুপারিশ করে। তার ঠিক আট বছর বাদে এবিষয়ে ঐতিহাসিক রায় দেয় ঢাকা হাই কোর্ট (Dhaka high court)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.