সুকুমার সরকার, ঢাকা: এবার শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ ও রেজিস্ট্রেশনের বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে রিট দায়ের। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশে। এই আন্দোলনের জেরেই পতন ঘটে হাসিনা সরকারের। এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলাকালে নির্বিচারে হত্যার অভিযোগ এনে প্রায় একশো বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে মানবাধিকার সংগঠন সারডা সোসাইটি। এনিয়ে হাই কোর্টে সোমবার রিট করেছেন সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া।
এদিকে, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা এম. হাফিজউদ্দিন খান-সহ ৫ জন। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই সংশোধনীর দ্বারা তদারকি সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫-এর বদলে ৫০ করা হয়। ওই রিটে যেসব প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনার নামে রয়েছে সেগুলোর নামের পরিবর্তনও চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া দেশ সংস্কারের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ সর্বনিম্ন ৩ বছর এবং বিদেশে পাচার করা ১১ লক্ষ কোটি টাকা ফেরত আনতে ও বিগত আওয়ামি লিগ সরকারের আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া আধিকারিকদেরও বদলির কথা বলা হয়েছে। আজ সোমবার রাজধানী ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি-সহ দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদেরদের অপসারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে দেশের ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সব পুরসভার মেয়র এবং ৪৯৩টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদেরও অপসারণ করা হয়েছে। তাঁদের জায়গায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী আধিকারিকদের প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ এবিষয়ে পৃথক আদেশ জারি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন ক্রমেই বড় হতে হতে গণ আন্দোলনের রূপ নেয়। যা পরে কার্যত রূপ নেয় ‘হাসিনা হঠাও অভিযানে’র। অবশেষে প্রবল বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জেরে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন হাসিনা। তাঁর পদত্যাগের পর স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের অধিকাংশই আত্মগোপনে চলে গিয়েছেন। জেলা ও উপজেলা পরিষদ থেকে শুরু করে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার প্রায় সব শীর্ষ পদই আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের দখলে ছিল। এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইন সংশোধন করে মেয়র-চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগের সুযোগ তৈরি করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.