সুকুমার সরকার, ঢাকা: অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা। লিবিয়া (Libya) পুলিশের হাতে আটক বাংলাদেশের কমপক্ষে ২০০ জন নাগরিক। গত শনিবার দেশটির পূর্ব উপকূলীয় জেলা মিসরাতা থেকে বাংলাদেশিদের আটক করা হয়। পরে ধৃতদের লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির একটি বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়েছে।
লিবিয়ার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আটক বাংলাদেশিরা আপাতত পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশি-সহ অবৈধ অভিবাসীরা লিবিয়ার জারিখ উপকূল থেকে নৌকায় করে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সে সময় তাঁদের আটক করা হয়।
লিবিয়ার পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেখান থেকে মোট ৫৪১ জনকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে দূতাবাসের পক্ষ থেকে রবিবার যোগাযোগ করে তাঁদের মধ্যে ২৪০ জন বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের পর জানা যাবে, সেখানে মোট কতজন বাংলাদেশি আছেন। রাষ্ট্রদূত শামীম উজ জামান জানান, আটক এই ব্যক্তিরা মানব পাচারকারীদের সহায়তায় অবৈধ পথে ইউরোপ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এখন তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ জন্য দূতাবাস থেকে ইতিমধ্যে আইওএম এবং স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
বলে রাখা ভাল, প্রায় এক দশক আগে একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির মৃতুর পর থেকে গৃহযুদ্ধে জর্জর লিবিয়া (Libya)। বিভিন্ন জেহাদি সংগঠন ও মিলিশিয়াগুলির মধ্যে লড়াইয়ে কার্যত নরকে পরিণত হয়েছে দেশটি। তারপর থেকেই প্রাণ বাঁচাতে সমুদ্রপথে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় ইউরোপের উদ্দেশে প্রায় প্রতিদিন রওনা হচ্ছেন শয়ে শয়ে মানুষ। দারিদ্রতার কারণে এবং যুদ্ধ থেকে পালিয়ে উন্নত জীবনের আশায় লিবিয়া হয়ে প্রচুর শরণার্থী প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিস হয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। বিপদসঙ্কুল ওই পথ পাড়ি দিতে গিয়ে বহু শরণার্থীর সমুদ্রে ডুবে মৃত্যু হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.