সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত মাস ধরেই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলিতে মায়ানমারের জঙ্গিরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অপহরণ করে হোটেলগুলিতে তরুণীদের দেহব্যবসায় নামানো হচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশেও পাচার করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিবাদকারী ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খুনখারাপি লেগেই আছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠক। বুধবার শরণার্থী শিবিরও পরিদর্শন করেন তিনি। বলেন, “যেকোনো ধরণের অপরাধ সংঘটিত হলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধী যে-ই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার স্বাভাবিক গতি কেউ ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মঙ্গলবার বিকেলে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন কক্সবাজার যান। বুধবার উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার শহরে ফেরেন। পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে সারা দেশে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনো মাদক কারবারিকে ছাড় দেওয়া হবে না। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কর্মকৌশল নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
টেকনাফে অপহরণের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে আইজিপি বলেন, “প্রতিটি অপহরণের বিষয়ে জড়িতদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” অপহরণ কিংবা যেকোনো ধরনের অপরাধ সংঘটিত হলে জাতীয় পরিষেবা ৯৯৯-এ যোগাযোগ করে সহায়তা চাওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন আইজিপি। মায়ানমারের নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘আরসা’মুক্ত রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির কীভাবে করা যায়, এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, “সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি যেমন অব্যাহত রয়েছে, তেমনি তাদের (আরসা) বিরুদ্ধেও অব্যাহত থাকবে।”
সম্প্রতি ট্রলারে মরদেহ উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, “এখানে সিআইডি, পিআইবি, RAB ও পুলিশ কাজ করেছে। ঘটনার মূল কারণ বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কেউ কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এ নিয়ে আমরা আরও কাজ করে যাচ্ছি। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের তথ্য সংগ্রহ করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।” আইজিপি উখিয়ার কুতুপালং ১৯ নম্বর ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। ক্যাম্পের ৮ এপিবিএন কার্যালয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পরে ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। বিকেলে আইজিপি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.